২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১২:৫৮:০০ পূর্বাহ্ন


দ্বাদশ নির্বাচন: কূটনীতিকদের প্রকাশ্যেই ব্রিফিং করবে বিএনপি, চলছে তদবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৬-২০২২
দ্বাদশ নির্বাচন: কূটনীতিকদের প্রকাশ্যেই ব্রিফিং করবে বিএনপি, চলছে তদবির দ্বাদশ নির্বাচন: কূটনীতিকদের প্রকাশ্যেই ব্রিফিং করবে বিএনপি, চলছে তদবির


আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেন অংশ নিতে চায় না, সে বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের প্রকাশ্যেই ব্রিফিং করতে চায় বিএনপি। এ জন্য দুদিন ধরে দলটির সিনিয়র নেতারা বিভিন্ন দূতাবাসে ব্যাপক তদবির করছেন। দলটির বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ঢের সময় বাকি থাকলেও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা ততই ফুটে ওঠছে রাজনীতির মাঠে। নির্বাচন কেমন হবে বা কার অধীন হবে, তা ঠিক করতে কথার চালাচালি হচ্ছে বেশ।

বিরোধী পক্ষ বলছে, বর্তমান সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনে যাবে না তারা। তাদের দাবি, সরকারকে পদত্যাগ করে দিতে হবে নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, সংবিধান অনুযায়ী হবে আগামী নির্বাচন। নির্বাচনে না এলে প্রধান বিরোধী পক্ষ বিএনপি অস্তিত্ব সংকটে পড়বে, মন্তব্য সরকার দলীয় নেতাদের।

এমন অবস্থায় বিরোধী দল বিএনপি কেন নির্বাচনে যেতে চায় না, তা বিভিন্ন মাধ্যমে ইতোমধ্যে পরিষ্কার করেছে তারা। তবে দেশের রাজনীতিতে পরোক্ষভাবে গুরুত্ব বহন করে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। তাদের কাছে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন ব্যবস্থা কেমন হওয়া দরকার ও নির্বাচনে না যাওয়ার কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরতে ব্রিফিং করতে যাচ্ছে বিএনপি।

সূত্র বলছে, শিগগিরই দেশে নিযুক্ত সব কূটনীতিককে একত্রে বসাতে যাচ্ছে বিএনপি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের দূতাবাসে দাওয়াতও পাঠিয়েছে তারা। এ জন্য বিভিন্ন দূতাবাসে ব্যাপক তদবির করছেন দলটির সিনিয়র নেতারা।

সূত্রের খবর, সেই আয়োজনে আসতে ইতোমধ্যে সুইডেন, নরওয়ে ও ভারতসহ অন্তত ছয়টি দেশের কূটনীতিককে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ জুন) ভারতীয় হাইকমিশনে অবস্থান করছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সেখানে ছিলেন তারা। এছাড়া এদিন বিকেলে গুলশানের ‘বে-টাওয়ারে’ অবস্থিত অন্তত পাঁচটি দূতাবাসে গিয়েছিলেন শামা ওবায়েদ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একাধিক নেতা সময় সংবাদকে জানিয়েছেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হবে সম্ভাব্য সেই ব্রিফিংয়ে। দলীয় সরকারের অধীন কেন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, তা অতীতের নির্বাচনের পরিস্থিতি তুলে ধরে জানানো হবে তাদের। দেশের রাজনীতিতে বিরোধী দলের কর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও জেলসহ বিগত বছরগুলোয় গুম ও খুন হওয়া ব্যক্তিদের তথ্য তুলে ধরা হবে ব্রিফিংয়ে।

বর্তমান সরকারের অধীন বিরোধী কর্মীদের সভা-সমাবেশে বাধা দেয়ার অভিযোগটিও তুলে ধরতে চায় তারা। সব মিলিয়ে বর্তমান সরকারের আমলে দেশের পরিস্থিতি কেমন রয়েছে, তার একটি সম্মুখ ধারণা কূটনীতিকদের দিতে চায় বিএনপি। সে লক্ষ্যে ২০১৪ সালে কেন তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি এবং ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়েও বিএনপি সেই ভোটকে কেন অবৈধ বলছে, তা উপস্থাপন করা হবে বলে জানান তারা।

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে আসলেও কেন তারা বর্তমান সরকারের অধীন নির্বাচনে যেতে চায় না, তারই একটি ধারণা তুলে ধরতে চায় দলটি।

বিএনপির একাধিক নেতা জানান, সেই কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির নেতাদের থাকার কথা রয়েছে। তবে কখন-কোথায় অনুষ্ঠানটি হবে, তা এখনো জানা যায়নি। শিগগিরই একটি পাঁচ-তারকা মানের হোটেলে ব্রিফিং হতে পারে বলে বিএনপির একটি সূত্র জানায়।