২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:৩১:২৭ অপরাহ্ন


রাজশাহীতে জোরপূর্বক নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারন, প্রতারক চক্রের নারীসহ ৫ সদস্য গ্রেফতার
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৬-২০২২
রাজশাহীতে জোরপূর্বক নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারন, প্রতারক চক্রের নারীসহ ৫ সদস্য গ্রেফতার রাজশাহীতে জোরপূর্বক নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারন, প্রতারক চক্রের নারীসহ ৫ সদস্য গ্রেফতার


রাজশাহী মহানগরীতে পুরোনো জিনিষ বিক্রি করার কথা বলে বাড়িতে ডেকে জোর পূর্বক নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারন করে ব্ল্যাকমেইল চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মাহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

শুক্রবার (৩ জুন) বিকেল সোয় ৪টায় মহানগরীর রাজপাড়া থানাধীন ডিঙ্গাডোবা ব্যাংক কলোনী এলাকার জনৈক ডাঃ মাহবুবুর রহমানের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো:  মহানগরীর রাজপাড়া থানার ডিঙ্গাডোবা নিমতলা ঘোষমহল এলাকার মোঃ মুন্নার স্ত্রী মোসাঃ হানিফা খাতুন(৩১), একই এলাকার মোঃ আব্দুল মমিনের ছেলে মোঃ মুন্না(৩৫), ডিঙ্গাডোবা ব্যাংক কলোনী এলাকার মোঃ মশিউর রহমানের ছেলে মোঃ মনি(২৭), ডিঙ্গাডোবা নিমতলা এলাকার মৃত আতাহার আলীর ছেলে মোঃ কবির হোসেন অরফে খিচ্চু(৩৩), নগরীর উপকন্ঠ কর্ণহার থানার ডাংগের হাট গ্রামের মৃত দুলাল অরফে শাহিন শাহ্রে স্ত্রী মোসাঃ ফরিদা বেগম(৪০)।

শনিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার(ডিবি) মোঃ আরেফিন জুয়েল।

তিনি জানান, গত (২৬ মে) ভাংড়ি ব্যবসায়ী মোঃ আবু বক্কর অরফে বাক্কার(৫৯) নামের এক ব্যক্তিতে রাত সাড়ে সাত ৭টায় অপরিচিত এক মহিলা তাকে ফোন করেন। তিনি ফোন রিসিভ করলে বলেন তার নাম মোসাঃ হানিফা খাতুন। তার স্বামী ঔষধ কোম্পানীতে চাকরি করেন। পরিবারসহ রাজপাড়া থানার ডিঙ্গাডোবা ব্যাংক কলোনী গোলজার হোসেন লেন, এলাকার জনৈক ডাঃ মাহবুবুর রহমানের দুইতলা বিল্ডিং এর নিচ তলায় ভাড়া থাকেন তিনি। তার বাসায় ২/৩ টি নষ্ট ফ্যান, ১টি পুরাতন সোফাসেট এবং অপ্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র বিক্রয় করবে বলে বাসায় ডাকেন তাকে। ভুক্তভোগী বাক্কার মহিলার কথায় সরল বিশ্বাসে তার দেওয়া ঠিকানার বাড়িতে পৌঁছান। এরই মধ্যে ৩জন যুবক ও ১জন নারী ওই রুমে প্রবেশ করে। 

সঙ্গে সঙ্গেই হানিফা খাতুন তার পরনের সালোয়ার কামিজ খুলে ব্রা ও পেন্টি পরা অবস্থায় ব্যবসায়ী বাক্কারকে জড়িয়ে ধরে। ওই সময় অন্যান্যরা বাক্কারের পরনের প্যান্ট শার্ট খুলে উলঙ্গ করে মহিলার সাথে নগ্ন ছবি এবং ভিডিও ধারন করে। এরপর তারা বলে নগ্ন ছবি ও ভিডিও ফেসবুক ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে এবং তার স্ত্রী-সন্তানকে দেখাবে। তবে নগদ তিনলক্ষ টাকা দিলে তারা সেই কাজ করবে না।

ভুক্তভোগী বাক্কার মান-সম্মান বাঁচানোর তাগিদে আকুতি মিনতি করে। এসময় তার কাছে থাকা নগদ ৪ হাজার টাকা জোর পূর্বক ছিনিয়ে নেয় প্রতারকরা। 

সেই সাথে তাকে চড় থাপ্পড় মেরে প্রাণ নাশের হুমকী প্রদান করে। বাক্কার তাদের হাত-পা ধরে টাকা দেওয়ার কথা বলে ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে আসে। পরের দিন সকালে মুক্তিপন ও চাঁদার ৩০ হাজার টাকা প্রতারকদের বাড়িতে গিয়ে দেয়। 

তারপরও তারা নগ্ন ছবি ও ভিডিও ফেসবুক/ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আরও টাকা দাবি করে।   

কোন উপাই না দেখে ভুক্তভোগী বাক্কার শুক্রবার (৩ জুন) বেলা ১১টায় মহানগর গোয়েন্দা অফিসে এসে ডিসি (ডিবি) বরাবর মৌখিক অভিযোগ দেন এবং বিস্তারিত ঘটনা জানান। 

বিষয়টি আমলে নেয় ডিবি ডিসি। ওই দিনই বিকেল সোয়া ৪টায় ডিবি পুলিশের একটি বিশেষ টিম অভিযান চালিয়ে ডাঃ মাহবুবুর রহমানের মালিকানাধীন দুইতলা বিল্ডিং এর নীচ তলা থেকে প্রতারকচক্রের ২জন নারী ও ৩জন পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে থেকে ভয়ভীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিপন ও চাঁদা বাজী করে হাতিয়ে নেওয়া ৩৪ হাজার টাকার মধ্যে নগদ ১০ হাজার টাকা এবং প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। 

এ ব্যপারে রাজপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

শনিবার সকালে প্রতারকদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান ডিবি ডিসি।