২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৫:৩৯:৫২ অপরাহ্ন


তথ্যই শক্তি আর তথ্যে প্রবেশাধিকার জনগণের ক্ষমতায়ন: তথ্য কমিশনার সুরাইয়া বেগম
স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৬-২০২২
তথ্যই শক্তি আর তথ্যে প্রবেশাধিকার জনগণের ক্ষমতায়ন: তথ্য কমিশনার সুরাইয়া বেগম তথ্যই শক্তি আর তথ্যে প্রবেশাধিকার জনগণের ক্ষমতায়ন: তথ্য কমিশনার সুরাইয়া বেগম


রাজশাহীতে তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়েছে।

সোমবার (৬ জুন) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য কমিশনার সুরাইয়া বেগম বলেন, তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ নিঃসন্দেহে একটি উত্তম আইন। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা এবং জনগণের ক্ষমতায়নে মাইলফলক। আইনটির অনন্য বৈশিষ্ট্য হল দেশের প্রচলিত অন্য সব আইনে কর্তৃপক্ষ জনগণের ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকে।

কিন্তু এই আইনে জনগণ কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষমতা আরোপ করে থাকে। এটি শুধু কাগজে কলমে না রেখে বাস্তবায়িত হলে এই আইন দ্বারা জনগণ উপকৃত হবেন। তথ্যই শক্তি আর তথ্যে প্রবেশাধিকার জনগণের ক্ষমতায়ন। প্রজাতন্ত্রের কাজে নিয়োজিত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য জনগণের সেবার চেষ্টা করা। সেই লক্ষ্যে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতে সকল সরকারী দফতরের কর্তৃপক্ষকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল এঁর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি। দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদান করেন, তথ্য কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা লিটন কুমার প্রামাণিক।

এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) শাহানা আখতার জাহান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু সালেহ মোঃ আশরাফুল আলম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য কমিশনার সুরাইয়া বেগম বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মানসিকতা পরিবর্তনের পাশাপাশি জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করতে হবে। আর জবাবদিহিতা বাড়লে অপরাধ প্রবণতা বা দুর্নীতি কমতে শুরু করবে। কেননা, ব্রিটিশ আমল থেকে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তথ্য গোপন রাখার প্রবণতা রয়েছে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে মানুষকে চিন্তা-চেতনা ও কথা বলার অধিকার দিতে হবে। তাই বাংলাদেশের সংবিধানের তথ্য অধিকার আইনের তথা বলা হয়েছে।

তথ্য কমিশনার আরো বলেন, ক্ষমতায়নের জন্য জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা একান্ত আবশ্যক। এতে সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারি ও বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারি সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে, দুর্নীতি হ্রাস পাবে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। যা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হবে।

তথ্য অধিকার আইন জনগণের ক্ষমতায়নের প্রকৃত হাতিয়ার উল্লেখ পূর্বক বিশেষ অতিথির বক্তব্য বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি বলেন, তথ্য অধিকার আইনটি সর্বজনীন, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে, জনগণকে সব কাজে অংশগ্রহণের অধিকার দেয়, উন্নয়নের মূল স্রােতধারায় নিয়ে আসে।

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ‘২০৩০ এজেন্ডা’, কাউকে পেছনে ফেলে নয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, সমাজের সর্বক্ষেত্রে অসমতা নিরসন করা। তাই দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে তথ্য অধিকার আইনের কোনো বিকল্প নেই বলে জানা তিনি।

তথ্য অধিকার আইনের গুরুত্ব তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, আইনের শুরুই হয়েছে ‘তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের নিমিত্ত বিধান করিবার লক্ষ্যে প্রণীত আইন।’

এখানে ‘জনগণ’ শব্দটি সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা বাংলাদেশ একটি প্রজাতন্ত্র, যার অর্থই হল জনগণের প্রাধান্য। আইনটির মূল ভিত্তি সংবিধানের ৭ ও ৩৯ ধারা। সংবিধান মতে, জনগণ প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক। এই মালিকের ক্ষমতায়নে, ক্ষমতা সুসংহতকরণে সবার সর্বদা সচেষ্ট থাকাই একান্ত কাম্য।

এটি একটি শক্তিশালী নাগরিক বান্ধব সর্বজনীন আইন। এই আইনে শ্রেণীগত ভেদাভেদ নির্বিশেষে সর্বস্তরের নাগরিককে রাষ্ট্রের তথ্য পাওয়ার অধিকার দেয়।

রাজশাহীর সময়/এএইচ