১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ০৩:২৬:১২ পূর্বাহ্ন


রাজশাহীর শ্যামপুর বালু ঘাটে পৌরসভার অতিরিক্ত টোল আদায়, বিপাকে সাধারন ব্যবসায়ীরা
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৬-২০২২
রাজশাহীর শ্যামপুর বালু ঘাটে পৌরসভার অতিরিক্ত টোল আদায়, বিপাকে সাধারন ব্যবসায়ীরা রাজশাহীর শ্যামপুর বালু ঘাটে পৌরসভার অতিরিক্ত টোল আদায়, বিপাকে সাধারন ব্যবসায়ীরা


রাজশাহীর পবা উপজেলার শ্যামপুর বালুঘাটে ইজারাদার ফাঁকা রসিদে পৌরসভার অতিরিক্ত টোল আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে বালুবাহী ট্রাক থেকে এই অতিরিক্ত টোল আদায় করা হচ্ছে। এতে ট্রাকমালিক, বালুর গ্রাহক ও ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। তবে অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করেছে টোল আদায়কারী ও কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, রাজশাহীর শ্যামপুর এলাকার বালুমহাল থেকে বালু পরিবহনের ট্রাকে টোল আদায়ের জন্য ইজারা দিয়েছে কাটাখালী পৌরসভা। সরকারিভাবে ট্রাকপ্রতি টোল ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও পৌরসভা সেটি বাড়িয়ে ২০০ টাকা করেছে। তবে কয়েকদিন হলো ইজারাদার ফাঁকা রসিদ দিয়ে ট্রাকপ্রতি ৩০০ টাকা করে আদায় করছে। প্রতিদিন শ্যামপুর বালুমহাল থেকে বালু নেয় এক থেকে দেড় শ ট্রাক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ট্রাকচালক বলেন, এক ট্রাক বালু পরিবহন করে চার-পাঁচ শ টাকা লাভ হয়। সেখান থেকে তিন শ টাকা দিলে তো কিছুই থাকে না। তাই ট্রাকের ট্রোল এখন বালু ব্যবসায়ীদের ওপর চাপানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ইজারাদাররা যা চান, তাই দিতে হয়। প্রতিবাদ করলে ট্রাক আর বালুমহালে যেতে দেবেন না। এ ছাড়া চালকদের মারধরও করেন তারা। ফলে তাদের কেউ কিছু বলেন না। এটা এক ধরনের ব্ল্যক মেইল বলেও জানান তিনি।

৩০ বছর ধরে বালুর ব্যবসা করছেন মহানগরীর হাদির মোড় এলাকার মো. মামুন। অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে তিনি বলেন, বালু বিক্রি করে প্রতি ট্রাকে লাভ থাকে ৫০ থেকে দেড় শ টাকা। তবে শ্যামপুর বালুমহালে ট্রাক থেকে অতিরিক্ত ১০০ টাকা করে নেওয়ার কারণে সেই লাভ থাকছে না।

তিনি আরো বলেন, বালুর দাম বর্ষার সময় বৃদ্ধি পায়, আবার স্বাভাবিক মৌসুমে বালু পর্যাপ্ত পরিমাণে উঠলে দাম কমে। কিন্তু টোল কোনো মৌসুমেই কমে না। এবার ইজারাদার ইচ্ছামতো টোলের পরিমাণ বাড়িয়েছেন। এ নিয়ে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়রও কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না।

অপর বালু ব্যবসায়ী সুজন বলেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণাধীন বিল্ডিং খুঁজে খুঁজে বালুর কাস্টমার বের করি। তারপর তাদের বালু সরবরাহ করি। এতে ট্রাকপ্রতি লাভ থাকে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। তবে এই অতিরিক্ত টোল দিতে গিয়ে এখন আর লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছি না।

সরকার নির্ধারিত টোলের চেয়ে অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ইজারাদার নজরুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে সংগ্রহ কমেছে, বালু নিতে ট্রাকও কম আসছে। তাই টোল আদায়ের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। নদীতে পানি নামলে এবং বালু আবার উঠতে শুরু করলে আবার কমিয়ে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কাটাখালী পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ আনোয়ার সাদাত নান্নুর বলেন, ট্রাক যাতায়াতের কারনে পাড়া, গ্রামের রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে যায়। এতে চরম বিপাকে পড়ে এলাকাবাসীরা। আরএ কারনেই রাস্তা মেরামতের জন্য ইট খোয়া ইত্যাদি কেনা কাটা জন্য অতিরিক্ত ১০০টাকা আদায় করা হচ্ছে। আদায়ের অতিরিক্ত ১০০টাকা শুধু রাস্তার খাতেই বরাদ্দ করা হবে বলেও জানান ভারপ্রাপ্ত মেয়র।