২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৬:০৬:০৬ অপরাহ্ন


চট্টগ্রামে এলপিজি সিলিন্ডার কাটার মূল হোতাসহ পুরো সিন্ডিকেটের ৯জন গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৬-২০২২
চট্টগ্রামে এলপিজি সিলিন্ডার কাটার মূল হোতাসহ পুরো সিন্ডিকেটের ৯জন গ্রেফতার চট্টগ্রামে এলপিজি সিলিন্ডার কাটার মূল হোতাসহ পুরো সিন্ডিকেটের ৯জন গ্রেফতার


টানা ২ দিনের অভিযানে অবৈধভাবে এলপিজি সিলিন্ডার কাটার ৩ জন মূল হোতাসহ পুরো সিন্ডিকেটকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম। এ সময় ১০ হাজার সিলিন্ডার জব্দ করা হয়েছে। 

শুক্রবার (৮ জুন) হতে শনিবার (৯ জুন) ভোর পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন ভাটিয়ারী ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। 

গ্রেফতারকৃতরা হলো: চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মৃত হাজী শফিউর রহমানের ছেলে মোঃ ইসমাইল হোসেন অরফে কুসুম(৫১), ফয়েজ আহাম্মদের ছেলে মোঃ মহসীন (৫১) ও মৃত ছিদ্দিক আহম্মেদের ছেলে মোঃ নুরুন নবী(৪৮) সহ আর ও ৯জন।এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৭, চট্টগ্র মের মুখপাত্র সিনিঃ সহকারী পরিচালক মোঃ নূরুল আবছার।

তিনি জানান, গত (৪ জুন) চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানাধীন ভাটিয়ারী এলাকায় বিএম ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভিতরে আগুন থেকে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর বিভিন্ন মাধ্যমে র‌্যাব-৭ চট্টগ্রাম জানতে পারে, কতিপয় অসাধু সিন্ডিকেটের সদস্যরা দীর্ঘদিন থেকে সীতাকুন্ড থানার তুলাতুলী এলাকায় জনবহুল গ্রামে অবৈধ চোরাই এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার সংগ্রহ করে গ্যাস সিলিন্ডার কেটে টুকরা করে বিভিন্ন রি-রোলিং মিলে বিক্রি করে আসছে। ফলে এলাকার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়া সহ যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে। 

বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করে ওই সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী এবং ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-৭। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার হতে শনিবার (৯ জুন) পর্যন্ত র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন ভাটিয়ারী ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ওই সিন্ডিকেটের মুল হোতা মোঃ ইসমাইল হোসেন মোঃ মহসীন ও মোঃ নুরুন নবীসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের তত্ত্বাবধানে থাকা কুসুমের ডিপো, ফকিরা মসজিদের উত্তর পার্শ্বের  কবির ষ্টিলের পরিত্যাক্ত বিল্ডিং-এর দক্ষিন পার্শ্বের এবং আশেপাশের এলাকা থেকে প্রায় ১০ হাজার এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার করা হয়। সেই সাথে গ্যাস সিলিন্ডার পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ২টি ট্রাক উদ্ধার জব্দ করা হয়। 

গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নের জন্য ও সিলিন্ডার গ্যাস বেশী ব্যবহারের জন্য কোম্পানী কমদামে গ্রাহকদের মাঝে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে থাকে। প্রকৃত অর্থে একটি খালি গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য ২৮০০/- টাকা। এলপিজির বিধান এর ৯১ ধারা মোতাবেক সিলিন্ডারের আকার আকৃতি পরিবর্তন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সিলিন্ডার সমূহের মালিকানা কোম্পানীর কাছে থাকে যা ডিলার বা গ্রাহক একই সিলিন্ডারে বার বার এলপিজি রিফিল করে নেয়। বিস্ফোরক পরিদপ্তরের ছাড়পত্রের মাধ্যমে প্রথমে একটি গ্যাস সিলিন্ডার ১০ বছর ব্যবহারের পর পুনরায় পরীক্ষা করে ব্যবহারের উপযোগী হলে আরো ৫বছর ব্যবহার পর বিস্ফোরক পরিদপ্তরের সদস্যদের উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানী এলপিজি সিলিন্ডার ধ্বংস করার কথা। গ্যাস সিলিন্ডার বাইরে কাটা সর্ম্পূন নিষেধ কিন্তু অসাধু আসামীরা কোন প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার জন্য চোরাই ভাবে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার সংগ্রহ করে সেগুলো কেটে বিভিন্ন রি-রোলিং মিলে সরবরাহ করে থাকে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই চক্রের সদস্যদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। পরিবেশ দুষন ও এলাকাবাসী অত্যন্ত দুর্ঘটনার ঝুকিতে থাকলেও ওই সিন্ডিকেটের লোকদের ভয়ে তারা কোথাও অভিযোগও করত না। তাদের গ্রেফতারে এলাকায় স¦স্তি ফিরে এসেছে এবং জনমনে র‌্যাবের ভাবমুর্তি উজ্জল হয়েছে। 

উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত ১ নং আসামী মোঃ ইসমাইল হোসেন অরফে কুসুম গত (১২ জুলাই ২০২১) সিলিন্ডার কাটার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিল।

এ ব্যপারে গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্থান্তর করা হয়েছে বলেও জানায র‌্যাব।