১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১২:৫৪:০৩ অপরাহ্ন


বিদেশে বিনিয়োগের পথ সুগম হচ্ছে
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০১-২০২২
বিদেশে বিনিয়োগের পথ সুগম হচ্ছে ফাইল ফটো


যেসব দেশের সাথে বাংলাদেশ সরকারের দ্বিপাক্ষিক পুঁজি-বিনিয়োগ, উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণ চুক্তি আছে, সেসব দেশে বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা তাদের অর্থ বিনিয়োগ করতে পারবেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অধিশাখা থেকে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এতদিন কিছু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বিদেশে বিনিয়োগ করলেও এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা বা বিধিমালা দেশে ছিলো না। সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠান আবেদন করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেটি যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত জানাতো।

এখন থেকে দেশের বাইরে বিনিয়োগের জন্য সরকারের কাছ থেকে ব্যবসায়ীদের অনুমতি নিতে হবে। আর ব্যবসায়ীদের আবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগের অনুমতি দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি।

তবে অনুমতি পাওয়ার পর কোনো কারণে প্রস্তাবিত বিনিয়োগ শেষ পর্যন্ত না হলে প্রদত্ত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে বলে বলা হয়েছে এই নীতিমালায়।

বিদেশে বিনিয়োগের শর্তাবলী

সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিনিয়োগের ক্ষেত্র হতে হবে এমন দেশ যেখানে বাংলাদেশের নাগরিকদের কাজ করার এবং তাদের অর্জিত অর্থ বাংলাদেশে ফেরত আনতে কোন বিধিনিষেধ নেই।

বিনিয়োগের গন্তব্য নিয়ে আর যেসব শর্ত রয়েছে। যেমন-যেসব দেশের সাথে বাংলাদেশের দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি আছে; যেসব দেশে বাংলাদেশি বিনিয়োগ এবং তা থেকে লাভসহ মূলধন, মুনাফা, লভ্যাংশ, সুদ, শেয়ার বিক্রয়লব্ধ অর্থ, বিনিয়োগ বিলুপ্তির ফলে অবশিষ্ট অর্থ এবং কারিগরি প্রজ্ঞান ফি, রয়্যালটি, পরামর্শক ফি, কমিশন বা অন্যান্য প্রাপ্য বা পাওনা বাংলাদেশে ফেরত আনার অনুমোদন আছে; যেসব দেশের সাথে বাংলাদেশ সরকারের দ্বিপাক্ষিক পুঁজি-বিনিয়োগ, উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণ চুক্তি আছে।

তবে কোনো বিনিয়োগকারী বিনিয়োগের আয় ও লভ্যাংশ দেশে আনতে ব্যর্থ হলে তা অর্থপাচার ও মানি লন্ডারিং হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কিছু দেশে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করতে পারবেন না। সেগুলো হলো-জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল যেসব দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেবে।

ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স (এফএটিএফ) এর আওতায় যেসব দেশের বিরুদ্ধে টাস্কফোর্স কর্তৃক প্রতিব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা আছে এবং যেসব দেশের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই।

বিদেশে বিনিয়োগ করার যোগ্যতা

প্রজ্ঞাপনে কারা বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবে তার বৈশিষ্ট্য দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো-রপ্তানিকারকের সংরক্ষিত কোটা হিসেবে পর্যাপ্ত স্থিতি আছে এমন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান; আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী সচ্ছল হতে হবে; আবেদনকারীর ক্রেডিট রেটিং অন্তত দুই হতে হবে; যে ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হবে সেটি বাংলাদেশে আবেদনকারীর ব্যবসায়িক কার্যক্রমের অনুরূপ বা সহায়ক বা সম্পূরক হতে হবে; বিনিয়োগ প্রস্তাবটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে টেকসহ হতে হবে; বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় আয় অর্জনের সম্ভাবনাময় উৎস এবং বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বৃদ্ধিসহ অন্য সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকতে হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকতে হবে; আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক ব্যবসা পরিচালনা, অর্থায়ন ও বিনিয়োগে দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল থাকতে হবে; প্রতিষ্ঠান তার বিগত ৫ বছরের বার্ষিক গড় রপ্তানি আয়ের অনধিক ২০ শতাংশ অথবা সর্বশেষ নিরীক্ষিত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে দেখানো নিট সম্পদের ২৫ শতাংশ হবে বিনিয়োগের সীমা। তবে এ দুটির মধ্যে যেটি কম সেটুকুই বিনিয়োগের আবেদন করা যাবে।

দেশের বাইরে খোলা যাবে অফিস

নীতিমালার আওতায় বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো বিদেশে তাদের শাখা অফিস স্থাপন ও পরিচালনা করতে পারবে। অর্থবছর শেষের ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবরণী বাংলাদেশ ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে পাঠাতে হবে।

রাজশাহীর সময় / এফ কে