২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:২১:০৩ অপরাহ্ন


বাগমারার ক্লিনিকগুলোতে চলছে অবৈধ গর্ভপাত বাণিজ্য
বাগমারা প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৬-২০২২
বাগমারার ক্লিনিকগুলোতে চলছে অবৈধ গর্ভপাত বাণিজ্য ফাইল ফটো


রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে চুপিসারে ঘটানো হচ্ছে অবৈধ গর্ভপাত। এসব ক্লিনিকে যারা গর্ভপাত করাচ্ছে তাদের অধিকাংশই অবিবাহিত কিশোরী ও যুবতি।

একটি সূত্র জানায়, জন্মনিয়ন্ত্রণমূলক কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বিবাহবহিভূ‌র্ত শারীরিক ঘনিষ্ঠতার কারণে তারা নিজেদের অজান্তেই সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ছে। পরে পরিবার ও সমাজে হেয়প্রতিপন্ন হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গোপনে স্থানীয় এসব ক্লিনিকে গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার চুক্তিতে গর্ভপাত ঘটাচ্ছে। এভাবে গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

সম্প্রতি উপজেলার ভবানীগঞ্জ তাহেরপুর ও হাটগাঙ্গোপাড়া এলাকার বেশকিছু ক্লিনিক ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। গত মাসে ভবানীগঞ্জের একটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে এক যুবতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পরে এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে থানা পুলিশসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও মিডিয়ার মুখ বন্ধ করতে ৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করতে হয় ঐ ক্লিনিক মালিককে।

এছাড়া চলতি মাসের ২২ জুন ভবানীগঞ্জের একটি ক্লিনিকে আরো একটি অবৈধ গর্ভপাতের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া এই ক্লিনিক থেকে মাঝে মধ্যেই মৃত শিশুকে কার্টর্নে ভরে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি স্থানীয়রা আঁচ করতে পারলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ভবানীগঞ্জ তাহেরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠেছে অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসবের কোনো বৈধ লাইসেন্স নেই । নেই কোনো যন্ত্রপাতি, ডাক্তার ও অবকাঠামো। তারা স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে চাঁদা দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা ব্যবসা।

স্থানীয়দের মতে, এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো নিয়মিত দেকভাল ও মনিটরিং করার জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতি থাকলেও তাদের কোনো কার্যক্রমই চোখে পড়ার মতো নয়। ফলে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড। এরা গ্রামের সহজ সরল রোগীদের বাগিয়ে এনে ছোটখাটো অসুখ-বিসুখকে বড় করে দেখিয়ে অপারেশন করতে বাধ্য করে। এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য বাগমারা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জোবাইদুর রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এসব বিষয়ে ক্লিনিক মালিক সমিতির সভাপতি ডা. সাব্বির আহম্মেদ অনিক জানান, আমরা ক্লিনিকগুলোতে স্বচ্ছতা ও সরকারি বিধিবিধানগুলো শতভাগ বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

রাজশাহীর সময়/এএইচ