১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০১:০৭:১৬ অপরাহ্ন


শিক্ষককে হেনস্তা করায় রাবি শিক্ষার্থী বহিষ্কার
আল্-মারুফ, রাবি প্রতিনিধি:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৬-২০২২
শিক্ষককে হেনস্তা করায় রাবি শিক্ষার্থী বহিষ্কার শিক্ষককে হেনস্তা করায় রাবি শিক্ষার্থী বহিষ্কার


শ্রেণিকক্ষে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। আজ বুধবার (২৯ জুন) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনে আইন বিভাগের শ্রেণিকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আশিক উল্লাহকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আশিক উল্লাহ নামে ওই শিক্ষার্থী বিভিন্ন সময় বিভাগের মেয়েদের হেনস্তাসহ বিভাগের শিক্ষকদের নামেও কটাক্ষ করে তার নিজস্ব 'আশিক নামা' ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট দিয়ে আসছিল। আজ সকাল ১০টায় ক্লাস চলাকালে আশিক উল্লাহ নামে ওই শিক্ষার্থী হঠাৎ ক্লাসে প্রবেশ করে এবং দরজা বন্ধ করে বিভাগের শিক্ষিকা প্রফেসর বেগম আসমা সিদ্দিকাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করে। সেসময় তাকে মারধর করতেও উদ্ধত হয়। এসময় সে শিক্ষিকা বের হওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয় আশিক। এসময় ক্লাসে থাকা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ক্লাস থেকে বের হন ওই শিক্ষিকা। কয়েকজন শিক্ষার্থী এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানালে তাদেরকেও হত্যার হুমকি দেয় বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর থেকে তাকে বহিষ্কারের দাবিসহ তিন দফা দাবিতে বিভাগের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।

সর্বশেষ পাওয়া তথ্য মতে, তাকে বহিষ্কারের দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান করছে শিক্ষার্থীরা। 

সাধন মূখার্জি নামে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জানান, আশিক উল্লাহ আগে থেকেই বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের অপমান করে তার নিজস্ব পেজে পোস্ট করতো। এরআগেও সে একই ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে ছুরিকাঘাত করেছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হলেও তাকে কিছুই করা হয়নি। প্রশাসনিক ভাবেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আজ সকালে আমাদের ক্লাসে আসমা ম্যামকে লাঞ্ছিত করে। আমরা এ ঘটনায় প্রতিবাদ করলে সে আমাদের হত্যার হুমকি দেয়। আমরা এ শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানাই। না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

এ বিষয়ে আইন বিভাগের প্রফেসর বেগম আসমা সিদ্দিকা বলেন, 'এই ছেলেটির সাথে আমার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। সে আমাকে আজ ক্লাসরুমে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করে। আমার প্রিয় শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে আমাকে বের করে আনে। না হলে আমার অনেক ক্ষতি করতে পারতো। আমি এ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আফআইআর করেছি। এখন বাকিটা বিভাগ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিবে।'

আইন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, 'এ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অনেক আগেই আমরা কমপ্লেইন পেয়েছি। আমরা একাডেমিভাবেও ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ দেয়া হয়েছে এবং স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া চলছে।'

প্রক্টর প্রফেসর আসাবুল হক জানান, 'এই শিক্ষার্থীর নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম ছেলেটি এখান থেকে পাশ করে বেরিয়ে যাক। কিন্তু সে এমন কাজ করতেছে সেটা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য। পূর্বের এবং আজকের অভিযোগের ভিত্তিতে তার নামে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট শৃঙ্খলা কমিটিতে যাবে তারপর সিন্ডিকেটে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মাননীয় ভিসি স্যার ওই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছেন।' 

এরপূর্বে, ঢাকার সিএমএম আদালতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর তারেক নূর, আইন বিভাগের প্রফেসর বেগম আসমা সিদ্দিকা, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান তুষার, সুমাইয়া বিনতে হাই, জান্নাতুল নাঈম মিতুর নামে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছে আশিক উল্লাহ নামে ওই শিক্ষার্থী।