২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১২:৫৮:০৪ অপরাহ্ন


জয়পুরহাটে কোরবানির জন্য প্রস্তুত এক লাখ ৭৮ হাজার পশু
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৭-২০২২
জয়পুরহাটে কোরবানির জন্য প্রস্তুত এক লাখ ৭৮ হাজার পশু ফাইল ফটো


ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখোরিত এখন জেলার পশুর হাট-বাজারগুলো। জেলায় এবার কোরবানির জন্য এক লাখ ৩০ হাজার ২৫০টি পশুর চাহিদা নির্ধারণ করা হলেও মজুদ রয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৬৬০টি গবাদি পশু। হাট-বাজারের পাশাপাশি এবার অনলাইনেও কোরবানির পশু কেনা-বেচা হচ্ছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল-আযহা উদযাপন করা  হবে আগমী ১০ জুলাই। 

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানায়, জয়পুরহাট জেলায় ছোট বড় মিলে জেলায় ১২ হাজার ৬৮৪টি পশুর খামার রয়েছে। আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে জেলায় এক লাখ ৩০ হাজার ২৫০টি পশু কোরবানি হবে এমন টার্গেট নির্ধারণ করা হলেও খামারে বর্তমানে পশু মজুদ রয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৬৬০টি। এরমধ্যে রয়েছে ষাঁড় রয়েছে ৩০ হাজার ৪৭৫টি, বলদ রয়েছে ১৫ হাজার ১৪টি, গাভী রয়েছে ২৫ হাজার ৬৬৩টি,  মহিষ ২০৪টি, ছাগল ৮২ হাজার ৩৪টি ও ভেড়া রয়েছে ২৫ হাজার ২৭০টি। যা দিয়ে জেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৫০ হাজার পশু দেশের বিভিন্ন  এলাকায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে। 

পশু কেনা-বেচার হাটবাজার ছাড়াও এবার অনলাইনে বেশ পশু কেনা-বেচা হচ্ছে বলে জানান অরণ্য এগেস্খা’র মালিক সাদমান আলিফ মিম জয়। সাদমান চলতি বছরে প্রাণিসম্পদ বিভাগে জাতীয় পর্যায়ে ডেনরি আইকন/২০২২ নির্বাচিত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এবার ৬টি প্রতিষ্ঠান পশু কেনা-বেচা করছেন এবং এতে বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারের প্রণোদনা সহায়তায় তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। খামারগুলোতে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোটাতাজা করণ কর্মসূচির আওতায় পশু লালন-পালন করা হয়ে থাকে। ছোট বড় মিলে জেলায় ২২টি পশুর হাট রয়েছে যে হাটগুলোতে বেচা-কেনা জমে উঠেছে। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ৬টি অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে পশু কেনা-বেচার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গ্রামীণ পর্যায়ে গরু-ছাগলের খামার তৈরিতে সরকারের নানামুখী আয় বর্ধনমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে সাধারণ মানুষ এখন অভাবকে দূরে ঠেলে দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন গরু-ছাগলের খামার করে। 

সহকারী পরিচালক (প্রাণিসম্পদ বিভাগ) ওবাইদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘জাকস ফাউন্ডেশন’ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ কর্মসূচির আওতায় এবার ৯০ কোটি টাকা ঋণ সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি ঢাকাতে গরু-ছাগল বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে।  

ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত গরুর পাইকার স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় হাটের পাশাপাশি গ্রামে ঘুরে ঘুরে কোরবানির পশু কিনছেন বলে জানান জেলা খামার মালিক সমিতির সভাপতি শাদমান আলিফ মিম রায়হান জয়। তিনি বলেন,  এবার ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা বেশি কিন্তু বড় জাতের ফ্রিজিয়ান গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় খামারিরা। 

জেলার পাঁচবিবি উপজেলার বনখুর গ্রামের শাদমান আলিফ মিম রায়হানের ’অরণ্য এগ্রো’ খামার ঘুরে দেখা যায়, সেখানে ২০টি গরু রয়েছে কোরবানির উপযুক্ত। এখানে প্রতিটি গরু সর্ব্বোচ্চ ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা কেনাবেচা হচ্ছে। গত বছর কালাপাহাড় নামে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গরু ওজন ছিল প্রায় ৯৮৬ কেজি। বিক্রি হয়েছিল ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। 

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘হাটবাজারের পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কোরবানির পশু কেনাবেচার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা পশুর হাট ছাড়াও গ্রামে ঘুরে পছন্দ মতো পশু কিনছেন। স্বাস্থ্যসম্মত পশু কেনা-বেচার জন্য ১০টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে জেলার কোরবানির পশুর হাটবাজারগুলোতে।’

রাজশাহীর সময়/এম