২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:৩৮:৫৩ অপরাহ্ন


রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক নিষিদ্ধ যানবাহনে বাড়ছে দূর্ঘটনা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৭-২০২২
রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক  নিষিদ্ধ যানবাহনে বাড়ছে দূর্ঘটনা রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক নিষিদ্ধ যানবাহনে বাড়ছে দূর্ঘটনা


ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের ২৭ কিলোমিটার জুড়ে পুঠিয়া উপজেলার অবস্থান। সম্প্রতি মহাসড়কে অবাধেই চলছে লেগুনা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইক, মাটি,বালু ও ইটবাহী ট্রাক্টরসহ নানা ধরনের অবৈধ যানবাহন। এসব যানবাহনের অনেক চালকই অনভিজ্ঞ, কম বয়সী এবং লাইসেন্সবিহীন। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সারাজীবনের জন্য কেউ কেউ পঙ্গু হয়ে পড়ছেন। কেউ কেউ হারাচ্ছেন প্রাণ। 

সচেতন মহলের অভিযোগ,  ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এসব যানবাহন সড়ক-মহাসড়কে চলছে। তারা বলছেন, সড়ক-মহাসড়ককে তিন চাকার বাহন মুক্ত রাখতে হলে কঠোর নজরদারির দরকার। এদিকে হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশ বলছে, দায়িত্বে কোনো অবহেলা নেই। বেশিরভাগ সময় চালকরা পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে মহাসড়কে গাড়ি চালান।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অদক্ষ চালক ও অতিরিক্ত গতিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে গত ৬ মাসে উপজেলায় শতাধিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন। আহত হয়েছেন ৭ শতাধিক।

জানা গেছে, গত কয়েক বছর থেকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে হাজারো অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। এর মধ্যে ১৪টি ইটভাটার দুই শতাধিক ট্রাক্টর, তিন শতাধিক লেগুনা, শতাধিক সিএনজি, অগণিত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। 

বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বদি বলেন, উপজেলার মধ্যে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক রয়েছে ২৭ কিলোমিটার। এ ছাড়া আঞ্চলিক সড়কও রয়েছে কয়েকটি। প্রতিদিনই মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটে। চলতি মাসে মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মারা গেছে ছয়জন। আর ছয় মাসে উপজেলার মধ্যে অন্তত ১৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাব্বির রহমান বলেন, এখানে গত ছয় মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন ৬৯৬ রোগী। তাঁদের মধ্যে অনেকেই স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তিনি আরও বলেন, এখানে আসা রোগীদের মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন পাঁচজন। গুরুতর আহত আরও কয়েকজন রোগীকে রামেক হাসপাতালে যাওয়ার পথে ও সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

সাব্বির রহমান আরও বলেন, রামেক হাসপাতাল কাছাকাছি হওয়ায় বেলপুকুর ইউনিয়ন এলাকায় দুর্ঘটনাজনিত রোগীরা এখানে আসেন না বললেই চলে।

পুঠিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তাঁরা মোট ৫৬টি সড়ক দুর্ঘটনার উদ্ধার কাজ করেছেন। এর মধ্যে দুই শতাধিক আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই সঙ্গে ছয় মাসে সড়কে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যাঁরা মারা গেছেন বা দুর্ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় যে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, সেই তালিকা তাঁদের কাছে নেই।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে এই কর্মকর্তা বলেন, মহাসড়কে দুর্ঘটনার শিকার বেশির ভাগ যানবাহন অবৈধ। অতিরিক্ত গতি ও অদক্ষতার কারণে এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে।

এ ব্যাপারে পবা হাইওয়ে থানার (শিবপুরহাট) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মোফাকারুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে। মাঝেমধ্যে গাড়িগুলো জব্দ করা হয় ও চালকদের নামে মামলা দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, জনসচেতনতায় দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।