২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০১:২৩:১৪ পূর্বাহ্ন


শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায়
ফারহানা জেরিন
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৭-২০২২
শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায় ফাইল ফটো


আপনি যদি নির্বিঘ্নে কাজ করতে চান, তাহলে পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। শক্তির জোগান, শরীরকে পুনরুদ্ধার ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে কাজ করে প্রোটিন। প্রোটিন মূলত দীর্ঘ-চেইন অ্যামিনো অ্যাসিড দ্বারা গঠিত। যাকে পেশির বিল্ডিং ব্লক বলে বলা হয়।

সাধারণত প্রোটিনজাতীয় বিভিন্ন খাবারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট এই পুষ্টি পায় শরীর। তবে শরীর যখন তার চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন পায় না তখনই এর ঘাটতি দেখা দেয়। যদিও অনেকেই তা টের পান না। তবে কয়েকটি লক্ষণ আছে, যেগুলো প্রকাশ পেলে বুঝে নিতে হবে আপনার শরীরে প্রোটিনের অভাব আছে।

যদিও অনেকেই এসব লক্ষণ সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যান। তবে দীর্ঘদিন শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে বিপদ বাড়তে পারে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায়-

>> প্রোটিনের ঘাটতি হলে ত্বক, চুল ও নখের উপর তার চিহ্ন ফুটে ওঠে। এগুলো সবই মূলত প্রোটিন দিয়ে তৈরি। এক্ষেত্রে ত্বকে লালচে ভাব, ভঙ্গুর নখ, পাতলা চুল, বিবর্ণ চুলের রং দেখা যায়।

>> শরীরের পেশিগুলো বেশিরভাগ প্রোটিন দ্বারা গঠিত। তাই প্রোটিনের ঘাটতি হলে পেশি হারাতে শুরু করবেন। পেশি ক্ষয় হলে শারীরিক কর্মক্ষমতাও কমতে থাকে।

>> প্রোটিনের ঘাটতি হলে হাড় ভাঙারও ঝুঁকি বাড়ে। প্রোটিন হাড়ের শক্তি ও ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত প্রোটিন না খাওয়ার ফলে আপনার হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে ও ফ্র্যাকচারের ঝুঁকিও বাড়ে।

>> পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে আপনার পেট দীর্ঘসময়ের জন্য ভরা থাকবে। ফলে বারবার খাওয়া বা ক্ষুধার পরিমাণও কমবে। আর প্রোটিনের ঘাটতি হলে আপনি বেশি ক্ষুধার্থ বোধ করবেন ও ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায়। যা মুটিয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

>> বিভিন্ন সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে। এক্ষেত্রে ইমিউনিটি সিস্টেমে প্রভাব পড়ে। আর দুর্বল ইমিউন সিস্টেম শরীরে প্রবেশ করা বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে না। যদি দেখেন ঘনঘন সর্দি বা কাশিতে আপনি ভুগছেন তাহলে সতর্ক থাকুন।

>> শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দিলে ফ্যাটি লিভার বা লিভারের কোষে চর্বি জমতে শুরু করে। বর্তমানে এই রোগে আক্রান্তে সংখ্যা বাড়ছে। জীবনধারণ পরিবর্তনের মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি মেলে। তার আগে শরীর পর্যাপ্ত প্রোটিন পাচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে।

কোন কোন খাবারে প্রোটিন থাকে?

প্রোটিন বিভিন্ন খাবারে পাওয়া যায়। যেমন- সামুদ্রিক খাবার, সয়া, ডিম, মটরশুটি, দুধ, পনির, দই, বাদাম, ওটস, মুরগির মাংস, পনির, ব্রোকলি, টুনা, কুইনো, মসুর ডাল, কুমড়ার বীজ, তিসি বীজ, সূর্যমুখী বীজ, মাছ, চিংড়ি, চিনাবাদাম, ব্রাসেল স্প্রাউটসহ বিভিন্ন খাবারে পাওয়া যায় প্রোটিন।

দীর্ঘদিন প্রোটিনের অভাবে ভুগলে শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই দিনে পর্যাপ্ত প্রোটিনজাতীয় খাবার গ্রহণ করছেন কি না তা নিশ্চিত করুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উচিত দৈনিক ৫০-১৭৫ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা। এরপরও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।

রাজশাহীর সময়/এম