১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:২০:১০ অপরাহ্ন


উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন থেকে ফেরাতে না পেরে মেয়েকে গলা টিপে হত্যা
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৮-২০২২
উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন থেকে ফেরাতে না পেরে মেয়েকে গলা টিপে হত্যা ফাইল ফটো


রংপুরের পীরগাছায় গলিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার মামলার বাদী হয়ে গেলেন আসামি। মেয়েকে উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে ফেরাতে না পেরে বাবা রফিকুল ইসলাম নিজেই গলাটিপে হত্যা করেন মেয়েকে। ঘটনার ৭ দিনের মাথায় চাঞ্চল্যকর এ মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পীরগাছা থানা পুলিশ ও রংপুর সিআইডি কর্মকর্তারা।

সোমবার দিবাগত রাতে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে হত্যাকারী রফিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকালে এসব তথ্য জানান পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান।

ওসি মাসুমুর রহমান জানান, উপজেলার অনন্তরাম বড়বাড়ি এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে লিপি বেগম (৩০) দীর্ঘদিন থেকে পতিতাবৃত্তি, মাদকদ্রব্য সেবন ও উশৃঙ্খল জীবন যাপন করে আসছিলো। তার নামে থানা পুলিশের নিকট বেশ কয়েকবার অভিযোগ করে এলাকাবাসী। স্বামী না থাকলেও সম্প্রতি লিপি বেগম ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এতে করে তার পরিবার চরম বেকায়দায় পড়ে। এ নিয়ে গত ২২ জুলাই রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বাবা রফিকুল ইসলাম নানা বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে গলাটিপে ও বালিশচাপা দিয়ে মেয়ে লিপিকে হত্যা করেন।

হত্যার পর মরদেহ বাড়ির পাশে গর্ত করে পুতে রাখলেও গন্ধ ছড়ানোর ভয়ে দুইদিন পর আবার লাশ তুলে বাড়ি থেকে ৮শ' গজ দূরে একটি জমির বৈদ্যুতিক পোলের গোড়ায় পুতে রাখেন। পরদিন গত ২৫ জুলাই সকালে জমি সমান করতে গিয়ে কোদালে মরদেহের পা বাঁধলে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও রংপুর সিআইডি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল থেকে লিপি বেগমের গলিত মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় লিপির রফিকুল ইসলাম মেয়ে নিখোঁজ ছিল বলে জানান এবং তাকে শনাক্ত করে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) আশরাফুল আলমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রংপুর সিআইডি ও পীরগাছা থানা পুলিশ অনুসন্ধান চালিয়ে মাত্র ৭ দিনের মধ্যে এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেন এবং ঘাতক রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রফিকুল ইসলামকে সাথে নিয়ে তার বাড়ি থেকে হত্যায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করে পুলিশ।

গতকাল সোমবার বিকেলে হত্যাকারী রফিকুল ইসলামকে রংপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর শুকুর আলী বলেন, হত্যার পর স্বাভাবিক ছিল রফিকুল ইসলাম। আমরা তাকে সন্দেহ করেই তদন্ত কাজ এগিয়ে নিই। অবশেষে তিনি মেয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তিনি একাই হত্যা করে মরদেহ গুম করার জন্য মাটির নিচে পুতে রাখেন বলে স্বীকার করেছেন।