২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৩:৪৭:৩৫ অপরাহ্ন


ভয়াবহ রূপ নিতে পারে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৮-২০২২
ভয়াবহ রূপ নিতে পারে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ফাইল ফটো


তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও ভয়াবহ রূপে পৌঁছতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার (৩ আগস্ট) চীনের সামরিক মহড়াকে দায়িত্বজ্ঞানহীন অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেন তিনি। চীনের পদক্ষেপের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ারও আশঙ্কা করছেন সু‌লিভান।

ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জ্যাক সুলিভান বলেন, ‘আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে চীন একেবারে দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করছে।’

সুলিভান বলেন, চীনের সামরিক বাহিনীর অংশগ্রহণে ধারাবাহিক মহড়া শুরু হওয়ায় কয়েকটি ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। ধারাবাহিক মহড়া চালানোর ক্ষেত্রে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা, সরাসরি গুলিবর্ষণ, আকাশপথে যুদ্ধবিমান এবং নৌপথে যুদ্ধজাহাজ মহড়া চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

সুলিভান আরও বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে উত্তেজনা এড়াতে আমরা চীনের দায়িত্বশীল কার্যক্রম প্রত্যাশা করছি। কারণ, এই উত্তেজনার কারণে আকাশ বা সমুদ্রপথে ভুল কিছু ঘটে যেতে পারে।’ তিনি তাইওয়ান প্রণালিতে উত্তেজনা প্রশমনে বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানান।

পেলোসির তাইওয়ান সফরের জবাবে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বেইজিং বুধবার (৩ আগস্ট) দেশটির চারদিকে সামরিক মহড়া শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সারিতে থাকা পেলোসি ইতোমধ্যে তাইওয়ান ত্যাগ করেছেন।

বেইজিং পেলোসির সফরকে একটি বড় হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে এবং এ সফর থেকে পেলোসিকে বিরত রাখতে চীনের পক্ষ থেকে একের পর এক কঠোর হুমকিও দেয়া হয়।

এদিকে পেলোসির তাইওয়ান ত্যাগের পর দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বুধবার (৩ আগস্ট) রাতে জানান, চীনের ২৭টি যুদ্ধবিমান এ দ্বীপরাষ্ট্রের বিমান প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ জোনে ঢুকে পড়েছিল। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বেইজিং তাইওয়ানের এ জোনে সামরিক অভিযান জোরদার করেছে।

তবে চীনের প্রতিক্রিয়ার জবাব তাইওয়ান ও যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে দেবে, তা অস্পষ্ট। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির চীন সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক টড হল বলেন, ‘আমার মূল দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, বেইজিং (চীন) যেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, তেমনি ওয়াশিংটনও (যুক্তরাষ্ট্র) বসে থাকবে না। ফলে দ্বিমুখী প্রতিক্রিয়ায় উত্তেজনা বাড়তে পারে।’

ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা এক নিবন্ধে ন্যান্সি পেলোসিও বলেছেন, চীন যখন তাইয়ানকে ও দেশটির গণতন্ত্রকে হুমকি দিচ্ছে, তখন আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না। জানা গেছে, ব্রিটিশ এমপিদের এক প্রতিনিধিদলও এ বছরের শেষে তাইওয়ান সফর করবে, তখন শঙ্কা আরও ঘনীভূত হবে।

উড্রো উইলসন সেন্টারের চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রবিষয়ক কিসিঞ্জার ইনস্টিটিউটের পরিচালক রবার্ট ডালির মতে, এই সংশয় ও উত্তেজনার মধ্যে পেলোসির তাইওয়ান সফর যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কে স্থিতিশীলতা যেমন আনবে না, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থও হাসিল হবে না। এমনকি তাইওয়ানের জনগণের নিরাপত্তাও বৃদ্ধি করবে না।

তথ্যসূত্র: এএফপি, দ্য গার্ডিয়ান