২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৮:২৭:৩৮ পূর্বাহ্ন


দিনাজপুরে চালের দাম বৃদ্ধি, দিশেহারা নিম্নআয়ের মানুষ
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৮-২০২২
দিনাজপুরে চালের দাম বৃদ্ধি, দিশেহারা নিম্নআয়ের মানুষ দিনাজপুরে চালের দাম বৃদ্ধি, দিশেহারা নিম্নআয়ের মানুষ


সারা দেশের ন্যায় দিনাজপুরেও জ্বালানী তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের কেজি প্রতি ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বাজারে ধানের সরবরাহ কম থাকায় অন্যদিকে ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে আমদানিকারকরা চাল আমদানি করছেন না।

বাজারে গুটি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা, আটাশ ৫৭ থেকে ৬০ টাকা, ঊনত্রিশ ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, মিনিকেট ৬৪ থেকে ৭০ টাকা, নাজিরশাইল ৮০ টাকা, বাশঁমতি ৭৮ থেকে ৮২ টাকা, সিদ্ধ কাঠারী ১০৪ থেকে ১১০ টাকা আর আতব চাল প্রকারভেদে ৯৬ থেকে ১১৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দিনাজপুরের পুলহাটের বিভিন্ন অটো রাইস মিল, ধান ব্যবসায়ী, মিল মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে ধান-চালের বাজারে বেশ অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত সপ্তাহ খানেক ধরে প্রতিদিনই বাড়ছে ধান ও চালের দাম। মিল মালিকরা বলছেন তেলের দাম বাড়ায় হঠাৎ করেই ধানের দাম বাড়তে শুরু করেছে।

গত এক সপ্তাহে বস্তাপ্রতি ধানের দাম বেড়েছে দেড় থেকে দুইশত টাকা। যদিও এর কোন যৌক্তিক কারণ নেই। কেননা, বাজারে যে ধান পাওয়া যাচ্ছে তা বিগত মৌসুমের ধান। আবার বাজারে ধানের সরবরাহও কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। বর্তমানে কৃষকের কাছে ধান না থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ও মজুদদাররা।

বাহাদুর বাজারের চাল ব্যবসায়ী এরশাদ হোসেন জানান, প্রতিদিনই চালের দাম বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৩ থেকে ৪ টাকা। খুরচা বাজারে আরও ১/২ টাকা বেড়েছে। একদিকে চালের দাম বাড়ছে অন্যদিকে চাহিদামত চাল পাওয়া যাচ্ছে না।

সদরের গোপালগঞ্জ অটোরাইস মিলের স্বত্বাধিকারী ইসলাম উদ্দীন জানান, চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় মিল চালু রাখতে জেনারেটর ব্যবহার করতে হচ্ছে। ডিজেলের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। আবার বাজারে ধানের সঙ্কট থাকায় ঠিকমতো মিল চালানো যাচ্ছে না।

এদিকে চাল ক্রেতা মজিবুর রহমান বলেন, চালসহ প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় জীবন যাপন করা দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। আয় বাড়েনি, প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছি।

একই কথা বলেন চাল ক্রেতা বিলকিস বানু। তার পরিবারে ৫ জন সদস্য। প্রতিদিন চালের প্রয়োজন ৪ কেজি আর বর্তমান বাজারে ৪ কেজি চালের দাম ২৬০ টাকা। তিনি বলেন, ভিক্ষার থালা নিয়ে বের হলেও জীবন চলবে না।

বাংলাদেশ অটো, মেজর ও হাস্কিং রাইস মিল কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট সহিদুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, যদিও এই সময়ে ধানের দাম বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই, তবুও ধানের দাম বাড়ছে। আর ধানের দাম বাড়লে চালের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংকগুলো সরকার নির্ধারিত ডলার রেট মানছে না। ফলে অতিরিক্ত মূল্যে চাল আমদানি করে আমদানিকারকরা পোষাতে পারছে না।

দিনাজপুর জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কামাল হোসেন বলেন, কয়েকদিনের ব্যবধানে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে জেলা খাদ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছে।