২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০২:৪৭:৫২ অপরাহ্ন


রাজশাহীতে দ্বিতীয় দিনেও বন্ধ অটোরিকশা, দুর্ভোগ কমাতে সিটি বাস সার্ভিস চালু
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৮-২০২২
রাজশাহীতে দ্বিতীয় দিনেও বন্ধ অটোরিকশা, দুর্ভোগ কমাতে সিটি বাস সার্ভিস চালু রাজশাহীতে দ্বিতীয় দিনেও বন্ধ অটোরিকশা, দুর্ভোগ কমাতে সিটি বাস সার্ভিস চালু


রাজশাহী মহানগরীতে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে সোমবার (২৯ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনেও বন্ধ রয়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। গণপরিবহন সার্ভিস না থাকায় রিকশার শহরে সড়কে বেরিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।

রোববার (২৮ আগস্ট) থেকে কোনো ঘোষণা ছাড়াই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রেখেছেন মালিক ও চালকরা। অটোরিকশা চলাচল বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী। তবে ব্যাটারিচালিত দুই আসনের রিকশা ও রিকশাভ্যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

চলমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য সোমবার দুপুরে অটোরিকশা মালিক ও চালকদের সঙ্গে নগর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ভাড়া বাড়ানো নিয়ে শহরজুড়েই এখন অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সোমবার সকাল থেকে অফিসগামী মানুষেরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন। আর ছোট অটোরিকশাগুলো চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ইচ্ছামতো ভাড়া হাঁকাচ্ছেন তারা।

২০ টাকার ভাড়া ৪০-৫০, ৩০ টাকার ভাড়া ৬০ টাকা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন তারা। ফলে দুই দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন-সাধারণ যাত্রী।

মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে সড়ক অবরোধ করে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মালিক ও চালকরা ।

সড়কে অটোরিকশা বের করলেই আন্দোনকারীরা তাকে ঘিরে ধরছেন। জোর করে অটোরিকশা থামিয়ে চালককে মারপিট ও অটোরিকশা ভাঙচুর করছেন। এছাড়া যাত্রীদের হেনস্থা করে রিকশা থেকে নামিয়ে দিচ্ছেন।

অনেক সময় বিচ্ছিন্ন ঘটনায় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করছেন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ভাড়া সর্বনিম্ন ১০ টাকা করার দাবিতে তারা ধর্মঘট পালন করছেন।

অটোরিকশার ধর্মঘট প্রশ্নে রাজশাহী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি সাগর হোসেন বলেন, সমিতিকে না জানিয়েই চালকদের একটি পক্ষ ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে হঠাৎ অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। এই ধর্মঘটের বিষয়ে জানেন না তারা। 

এদিকে, জনদূর্ভোগ কমাতে সোমবার (২৯ আগস্ট) সকাল থেকে সড়কে নেমেছে বাস।

রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে সাহেববাজার এবং কাটাখালী থেকে কোর্ট পর্যন্ত দুটি রুটে এসব বাস চলাচল করছে। অটোরিকশার ভাড়ায় গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছেন যাত্রীরা। এতে প্রথম দিনের চেয়ে পথের দূর্ভোগ কিছুটা হলেও কমেছে।

জানা গেছে, ৯৬ দশমিক ৭২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রাজশাহী নগরীতে প্রায় ১৬ লাখ লোকের বাস। গণপরিবহন বলতে ভরসা কেবল ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা।

সিটি কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১০ হাজার অটোরিকশা এবং ৫ হাজার রিকশা চলাচল করে নগরীতে। কিন্তু চলাচলকারী রিকশা ও অটোরিকশার সংখ্যা এর চেয়েও কয়েকগুণ বেশি।

রিকশা-অটোরিকশার নিবন্ধনের পাশাপাশি চালকদেরও নিবন্ধন দেয় সিটি কর্পোরেশন। তবে এসব যানবাহনে নিয়ন্ত্রণ নেই রাসিকের। ভাড়া নির্ধারণ করা থাকলেও ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলে সর্বত্র।

এর মধ্যেই ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে নগরবাসীকে জিম্মি করেছেন অটোরিকশা মালিক ও চালকরা। এই পরিস্থিতিতে নগরীতে সিটি সার্ভিস বাস নামানোর দাবি জানিয়েছেন নগরীর বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ। তবে নগরীতে এখনই সিটি বাস সার্ভিস চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব।

তিনি বলেন, জনদূর্ভোগ লাঘবে আপাতত নগরীর দুটি রুটে ৩০টি যাত্রীবাহী বাস নামানো হয়েছে। এগুলো অটোরিকশার ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করবে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, নগর পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেই এসব বাস নামানো হয়েছে। সিটি সার্ভিস হিসেবে বাস নামানো গেলে নগরীর যানজট অনেকাংশে কমে যাবে।

নগরীতে সিটি সাার্ভিস চালুর বিষয়ে জানতে চাইলে এই পরিবহন মালিক নেতা বলেন, রাজশাহী নগরীতে সিটি সার্ভিস হিসেবে বাস চালু করা লাভজনক হবে না। তবে প্রতিদিন আমাদের অন্তত কয়েকশ বাস বসে থাকে। এগুলো সিটি সার্ভিস হিসেবে নামানো যেতে পারে।