২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০২:৫৬:০৫ অপরাহ্ন


নতুন যাত্রার শুরুতেই বাংলাদেশের সামনে আফগান চ্যালেঞ্জ
ক্রীড়া ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৮-২০২২
নতুন যাত্রার শুরুতেই বাংলাদেশের সামনে আফগান চ্যালেঞ্জ ফাইল ফটো


এশিয়া কাপের সবশেষ চার আসরের তিনটিতেই ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। তবে একবারও ফাইনাল ভাগ্যটা সুপ্রসন্ন হয়নি টাইগারদের। ২০১২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে আর সবশেষ দুই আসরেই বাংলাদেশের কপাল পুড়েছে ভারতের বিপক্ষে।

এশিয়া কাপে টাইগারদের এবারের মিশন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। আমিরাতের শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় মাঠে গড়াবে ম্যাচটি।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ যেন সদ্য হাঁটতে শেখা শিশু। অথচ শুরুতে এই ফরম্যাটকেই বাংলাদেশের জন্য আদর্শ ফরম্যাট বলে মনে করত সবাই। স্ট্রোক খেলতে পছন্দ করা বাংলাদেশের ব্যাটাররা অবশ্য সে আশায় গুড়েবালি দিয়েছে দ্রুতই। স্ট্রোক খেলতে পছন্দ করা টাইগার ব্যাটাররা সময়ের সঙ্গে ভুলতে বসেছে চার-ছক্কা মারা। পাওয়ার হিটারের অভাবে বোলাররা প্রায়ই পায় না লড়াইয়ের মতো পুঁজি।

গত বছর দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে হারানো টাইগারদের পারফরম্যান্সের গ্রাফ আরও নিম্নমুখী হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে। গত বছর সে আসরে স্কটল্যান্ডের মতো দুর্বল শক্তির সামনেও দাঁড়াতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। শেষ ১৫ টি-টোয়েন্টিতে টাইগাররা জয় পেয়েছে মাত্র দুটি ম্যাচে। দেশের মাটিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটা টি-টোয়েন্টিতে জয় পাওয়া বাংলাদেশ সবশেষ সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে এক ম্যাচে।

টাইগারদের এই দুর্দশায় টনক নড়ে বোর্ডের। তাই নতুন করে এই ফরম্যাটে শুরু করতে চায় তারা। যে লক্ষ্যে ফের জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে সাকিব আল হাসানের হাতে। কোচ ডমিঙ্গোর জায়গায় টি-টোয়েন্টির ভার ভারতীয় কোচ শ্রীরাম শ্রীধরনের কাঁধে। দলেও এখন সিনিয়রদের জায়গায় ফ্রন্টলাইনে আফিফদের মতো তরুণরা। এই এশিয়া কাপ দিয়েই যে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরুর ঘোষণা দিয়ে রেখছে বোর্ড।

টাইগারদের এই নতুন যুগের প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ টি-টোয়েন্টির সমীহ জাগানো দল আফগানিস্তান। দারুণ বোলিং অ্যাটাক ও হার্ডহিটারদের সমন্বয়ে দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ দল তারা। দলে রয়েছে রশিদ খানের মত সময়ের সেরা স্পিনার। হজরতউল্লাহ জাজাই, রহমানুল্লাহ গুরবাজদের মতো মারকুটে ব্যাটারদের নিয়ে ব্যাটিং লাইনআপও দুর্দান্ত। তাই অনেকের চোখে এই ম্যাচে ফেবারিট আফগানিস্তানই।

তবে, অনেকের এই মতকে পাত্তা দিতে নারাজ দলের দায়িত্বে থাকা শ্রীরাম। আফগানদের সমীহ করলেও বিশেষ কাউকে নিয়ে যে আলাদাভাবে ভাবছে না তার দল সেটা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে টাইগারদের এই ব্যাটিং পরামর্শক বলেন, 'আফগানিস্তান খুবই বিপজ্জনক দল। শুধু রশিদ খানের ওপর নির্ভর করে না। আমরা জানি রশিদ টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে আমরা যখন প্রস্তুতি নিচ্ছি, সেটি আফগানিস্তান দলের জন্যই। রশিদ খান, মোহাম্মদ নবি বা ফজলহক ফারুকিতে কিছু যায় আসে না। আমরা আফগানিস্তান দলের জন্যই প্রস্তুত।'

তিনি আরও জানান, ফল কী হবে তা নিয়ে ভাবছে না দল। বরং নিজেদের সেরাটা মাঠে উজাড় করে দেওয়াটাই দলের লক্ষ্য। দলের প্রত্যেকেই তাদের ভূমিকা জানে বলে জানান তিনি।

কেমন হতে পারে টাইগারদের একাদশ, এ নিয়ে জল্পনা চলছে গত কয়েকদিন। তবে দল নিয়ে হয়তো খুব একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যাবে না টাইগাররা। তাই ওপেনিংয়ে যে এনামুল হক বিজয়ই থাকছেন তা মোটামুটি নিশ্চিত বলা যায়। তার সঙ্গী হিসেবে নাঈম শেখের সম্ভাবনাই বেশি।  

মিডল অর্ডার নিয়ে অবশ্য খুব একটা চিন্তা নেই টাইগারদের। দলের অভিজ্ঞ তারকারাই এই জায়গায় খেলবেন। ওয়ান ডাউনে সাকিব। চার নম্বরে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া আফিফকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। পরের জায়গাগুলোয় মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ এক প্রকার নিশ্চিত।

এরপরের জায়গাটার জন্য সাব্বির ও মোসাদ্দেকের মধ্যে হতে পারে লড়াই। একাদশে দেখা যেতে পারে পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনকেও। দলের প্রধান স্পিনারের ভূমিকায় নাসুম আহমেদ কিংবা শেখ মেহেদীর মধ্যে একজনকে দেখা যেতে পারে। আর পেস আক্রমণের নেতৃত্বে থাকবেন মুস্তাফিজ। আরেক পেসার হিসেবে এবাদতের চেয়ে তাসকিনের খেলার সম্ভাবনাই বেশি।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: এনামুল হক বিজয়, নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক),  আফিফ হোসেন, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান/ মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক) এনামুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শেখ মেহেদী, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, এবাদত হোসেন, পারভেজ ইমন, নাঈম শেখ এবং তাসকিন আহমেদ।