১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০১:৫১:১১ অপরাহ্ন


আজ ৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৯-২০২২
আজ ৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস আজ ৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস


সারা বিশ্বে শকুনকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম শনিবার আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে থাকে।

তারই ধারাবাহিকতায় আজ ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস। বাংলাদেশের বন বিভাগ ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) জরিপ অনুযায়ী, ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে ১০ লাখ শকুন ছিল। কিন্তু মাত্র তিন যুগের ব্যবধানে ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ কমে গেছে। বাংলাদেশে এখন মাত্র ২৬০টি শকুন বেঁচে আছে। এর মধ্যে ১২০টির মতো আছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার রেমা-কালেঙ্গা বনাঞ্চলে।

সারা বিশ্বে শকুনকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম শনিবার আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে থাকে।

গ্রামগঞ্জে এক সময় গরু, মহিষসহ গবাদিপশুর মৃতদেহ যেখানেই ফেলা হতো, দেখা যেত কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশে উড়ছে শকুনের পাল। কিভাবে তারা খবর পেত তা নিয়ে রহস্যের অন্ত নেই। দ্রুতগতিতে তারা মৃত গবাধি পশুর মাংস খেয়ে সাবাড় করে দিত। শকুন প্রকৃতি থেকে মৃতদেহ সরানোর কাজ করে রোগব্যাধিমুক্ত পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এখন এই প্রাণী মানবসৃষ্ট কারণে বিলুপ্তের পথে। বিশেষ করে বাংলাদেশের পরিচিত বাংলা শকুন এখন মহাবিপন্ন প্রাণী।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমা-কালেঙ্গায় প্রতি বছর এখান থেকে ২০ থেকে ৩০টি শকুনের বাচ্চা উৎপাদন হয়। ২০১৪ সাল থেকে রেমা-কালেঙ্গায় আইইউসিএন বাংলাদেশের শকুন গবেষণা প্রকল্প গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে শকুনকে নিরাপদ খাবার দেওয়া হয় এবং গরুর কলিজার নমুনা সংগ্রহ করে বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখছেন শকুনের জন্য ক্ষতিকর ড্রাগের উপস্থিতি কেমন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিকভাবে শকুনের পরিচর্যা করলে বাংলাদেশের আকাশে আবারও শকুন দেখা যাবে।

রেমা-কালেঙ্গা সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও হবিগঞ্জের সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আকবর হোসেন জিতু জানান, শকুন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখে। বিলুপ্তপ্রায় এই প্রাণীকে রক্ষার জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রেমা-কালেঙ্গার ময়না বিল এলাকায় যাতে নির্বিঘ্নে থাকতে পারে তার জন্য ২০০ উঁচু গাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে। লোকজন যাতে সেখানে গিয়ে শকুনকে বিরক্ত না করে তার জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটিতে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবকদেরকে আলাদাভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) আজীবন সদস্য ও সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, ‘রেমা-কালেঙ্গা বাংলাদেশের একটি প্রাচীন বন। এখানে উঁচু ও প্রাচীন গাছ রয়েছে। পাশাপাশি অনেক প্রাণীর বসবাস এই বনে। চোর এবং শিকারীদের হাত থেকে এই গাছ ও প্রাণীকে রক্ষা করতে পারলে শুধু শকুনই নয়, সকল প্রাণীই রক্ষা পাবে।’