২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৫:০৯:৪৫ অপরাহ্ন


মহানগরীতে মামলা তুলে নিতে বাদীর বাড়িতে তালা দিলেন আসামীরা
ইব্রাহীম হোসেন সম্রাট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৯-২০২২
মহানগরীতে মামলা তুলে নিতে বাদীর বাড়িতে তালা দিলেন আসামীরা খড়খড়িতে মামলা তুলে নিতে বাদীর বাড়িতে তালা দিলেন আসামীরা


রাজশাহী মহানগরীর ললিতাহার খড়খড়ি এলাকায় মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি ও বাড়িতে তালা দিয়েছেন আসামীরা বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে নগরের মতিহার থানায় বাদীর পক্ষ থেকে দেওয়া লিখিত অভিযোগে এসব তথ্য জানা গেছে।

অভিযোগটি করেছেন, নগরীর মতিহার থানাধীন খড়খড়ি ললিতাহার এলাকার কামরুজ্জামানের স্ত্রী আজমিরা বেগম (৪১)।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মামলার আসামী হারুন অর রশীদ (৪৪), তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন (৩৯) ও অপর আরো ৫ জন আসামীসহ ৭ জন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অভিযোগকারী আজমিরার বাড়িতে গিয়ে মারধর করলে তিনি আহত হন। পরে তিনি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত, (মতিহার) রাজশাহীতে মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলার জের ধরে হুমকি দেওয়ায় তার স্বামীর ১০৭ ধারার মামলায় আসামীদের মধ্যে হারুন অর রশীদ ও তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন (৩৯) আদালতে মুচলেকা দিয়ে আসে। ওই দিনই আবার তারা তার বাড়ির সামনে এসে তাকে মেরে হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে দেয়। চিকিৎসা শেষে পুনরায় তিনি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত, (মতিহার) থানায় পৃথক একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দায়েরের কারণে আবার একই আসামীরা তাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি ও মারধরের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় তিনি মতিহার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
আসামীদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো তুলে নেওয়ার জন্য সোমবার সকালে হারুন অর রশীদ ও তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন হঠাৎ করে তার বাড়ির দরজার সামনে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়ে গেট খুলতে বলে। ঘটনার সময় তার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। তিনি দরজা খোলার সাথে সাথেই রাবেয়া তাকে জাফটে ধরে কিল-ঘুষি মারে ও বলতে থাকে এই জমি ও বাড়ি তাদের।
এ সময় আসামী হারুন দেশীয় অস্ত্র বের করে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এগিয়ে গেলে তিনি প্রাণ ভয়ে রাবেয়ার হাত থেকে ছুটে পালিয়ে যান। তার অনুপস্থিতে বাড়িতে প্রবেশ করে ব্যাগে থাকা ২০ হাজার টাকা ও অন্যান্য সাংসারিক কিছু জিনিসপত্র নিয়ে যায় ও বাড়িতে তালা মেরে দেয়। পরে তিনি ছোট দেবরের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা ও দেবর জান মোহাম্মদকে নিয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন গেটে তালা লাগিয়ে দিয়ে আসামীরা দাঁড়িয়ে রয়েছে।
বাড়ির দরজায় লাগানো তালা খুলে দিতে বললে তারা মারমুখী আচরণ করে ও হাসুয়া দিয়ে কোপানোর ভয় দেখায়। এরপর বলে, তুই যে মামলাগুলো করেছিস সেগুলো তুলে নে। মামলা তুলে না নিলে বাড়িতে ঢুকতে দেবনা এবং মেরে শেষ করে দেব। এটা আমাদের বাড়ি।
পরে আজমিরা বেগম জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে সাহায্য চাইলে মতিহার থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেলে কৌশলে হারুন পালিয়ে যায়। তবে তার স্ত্রী রাবেয়া পুলিশের সামনেই মারমুখী আচরণ করে। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে বাড়ির দরজায় তালা খুলে দেওয়া হয়। ঘটনার সময় আসামীদের আরো দুই সহযোগী ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, মারধরের শিকার হয়ে মামলা করায় প্রতিনিয়ত মারধর ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সুষ্ঠভাবে বসবাস করতে পারছেন না। তাই তিনি তিনি সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে আসামীদের শাস্তির দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে মতিহার থানার ডিউটি অফিসার বিলাসি রাণী বলেন, থানায় আজমিরা নামের এক নারী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।