০৩ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:২৩:৪১ অপরাহ্ন


রেকর্ড হারে বরফ গলছে মেরু প্রদেশের সাগরগুলিতে !
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৯-২০২২
রেকর্ড হারে বরফ গলছে মেরু প্রদেশের সাগরগুলিতে ! রেকর্ড হারে বরফ গলছে মেরু প্রদেশের সাগরগুলিতে !


সুমেরু আর কুমেরু, পৃথিবীর দুই মেরুরই সাগর, মহাসাগরের উপর পুরু বরফের চাঙড় গলে পাতলা হয়ে যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। ফাটল ধরছে হিমবাহে। বিশাল বরফের চাঁই ভেঙে পড়ছে আন্টর্কটিকায়। চিড় ধরছে জমাট বাঁধা বরফের স্তুপে। জলবায়ু বদলের অশনি সঙ্কেত এসেছিল আগেই। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, আন্টার্কটিকা ও আর্কটিকের পুরু বরফের চাঙড় গলে পাতলা হয়ে যাচ্ছে খুব দ্রুত। রেকর্ড হারে বরফ গলছে মেরু প্রদেশের সাগরগুলিতে।

বিপদসঙ্কেত দিয়েছে নাসা। উপগ্রহ চিত্র দেখিয়েছে, মেরু প্রদেশের সাগরগুলিতে পুরু বরফের স্তর জমে থাকত। বিশ্ব উষ্ণায়ণের কারণে সেই বরফের স্তর গলে গিয়ে মাত্র ১৫ শতাংশে এসে ঠেকেছে। ১৯৮০ সালের ছবিটা যেমন ছিল, ২০২২ সালে এসে তা পুরোটাই পাল্টে গেছে। দু’বছর আগেই দেখা গিয়েছিল, দক্ষিণ মেরুর উত্তর প্রান্তের ‘এসপ্যারেঞ্জা বেসে’র তাপমাত্রা ছুঁয়ে ফেলেছে ১৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফারেনহাইটের মানদণ্ডে ৬৪.৯৪ ডিগ্রি। আন্টার্কটিকার ইতিহাসে যা একটি রেকর্ড। 

আন্টার্কটিকার ‘নর্থ রিফ্ট’ নিয়ে বিজ্ঞানী, পরিবেশবিদদের চিন্তা ছিল আগেই। কারণ, গত কয়েক বছর ধরে আন্টর্কটিকায় যেভাবে হিমবাহ ভেঙে গলে যাচ্ছে তাতে ঘুম উড়েছে বিশ্বের তাবড় পরিবেশবিদদের। পৃথিবীর তাপ বাড়ছে, মেরুপ্রদেশে বরফ গলছে, সমুদ্রের জল বাড়ছে, জলবায়ুর বদল আসন্ন সর্বনাশের খাঁড়া ঝুলিয়েই রেখেছে। তার মধ্যেই নর্থ রিফ্টের ওই পাহাড়প্রমাণ বিশাল বরফের চাঁই ভেঙে পড়াকে মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না পরিবেশ বিজ্ঞানীরা

 আন্টার্কটিকার বরফের বিশাল বিশাল পুরু চাঙড়গুলির ইতিমধ্য়েই ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভাঙলেই দ্রুত বরফ গলতে শুরু করবে আন্টার্কটিকার (Climate Change)। চিড় ধরতে শুরু করেছে আন্টার্কটিকার বিশাল বিশাল গ্লেসিয়ারগুলিতেও। পরিণতিতে আর ১০০ বছরে অন্তত ১০ ফুট উঠে আসতে পারে সমুদ্রের জল-স্তর। তাতে বহু দেশের বহু শহর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা।

নাসা দেখিয়েছে, বিশাল উঁচু বরফের দেওয়াল ২০ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। কোনও কোনও এলাকা থেকে আবার বরফের চাঁই অদৃশ্য হয়ে গেছে। হিমবাহে ভাঙন এত দ্রুত হচ্ছে যে চিন্তার কারণ রয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় বরফের দেওয়ালে বিপজ্জনক চিড় ধরে রয়েছে, যেগুলো ক্রমাগত বাড়ছে।

গবেষকরা বলছেন, রেকর্ড হারে বরফ গলছে মেরু অঞ্চলগুলিতে । বিশেষত গত কয়েক বছরে গ্রিনল্যান্ডে বড় বড় বরফের চাঁই অদৃশ্য হয়েছে। যার মানেই হল সেইসব হিমশৈল গলে সমুদ্রে মিশে গেছে। যার ফলে সমুদ্রের জলস্তরও বেড়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরফ গলার হার যত বাড়বে, তত বাড়বে পৃথিবীর উষ্ণতা। আর তত দ্রুত গতিতে গলতে থাকবে বরফ। অর্থাৎ গোটাটা চক্রবৃদ্ধিহারে এগোতে থাকবে। যার জেরে উদ্বেগজনক ভাবে উঠবে সমুদ্রের জল-স্তর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি গ্রিনল্যান্ডের হিমবাহ সম্পূর্ণ গলে যায়, তাতে গোটা পৃথিবীতে সমুদ্রের জলস্তর গড়ে ২৩ ফুট বাড়বে, যা সুমুদ্রোপকূলবর্তী বহু দেশের বহু শহরকে গ্রাস করবে। শহরগুলি চলে যাবে জলের তলায়।