২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৬:৫৫:৪৮ অপরাহ্ন


ফিলিপিন্সে বিষ্ফোরক টাইফুনের আঘাতে চার জন নিহতে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৯-২০২২
ফিলিপিন্সে বিষ্ফোরক টাইফুনের আঘাতে চার জন নিহতে ফাইল ফটো


ফিলিপিন্সের প্রধান দ্বীপে একটি টাইফুন আঘাত হানার পর চার জন উদ্ধারকর্মী নিহত হয়েছে এবং নিখোঁজ রয়েছে  একজন

এর আগে সুপার টাইফুন হিসেবে চিহ্নিত করা টাইফুন নোরুর প্রভাবে প্রধান দ্বীপ লুজনে ঘণ্টায় ২৪০কিলোমিটার বেগে ঝড়ো বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। এখানেই দেশটির অর্ধেক মানুষ বাস করে। সংখ্যা এগার কোটির মত।


আবহাওয়াবিদরা বলছেন লুজনে 'বিস্ফোরক তীব্রতা' নিয়ে আঘাত হেনেছে ঝড়টি। এই বছর আঘাত হানা সবচাইতে শক্তিশালি ঝড় নোরু।

বুলাকান এলাকার গভর্নর ড্যানিয়েল ফার্নান্দো বলেন, উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় আঘাত হানা ঝড়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস ওই পাঁচ জন উদ্ধারকর্মীকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে কার্ডিং নামে পরিচিত টাইফুন নোরু রবিবার স্থানীয় সময় রাত আটটা কুড়ি মিনিটে দ্বিতীয়বার ভূমিতে আছড়ে পড়ার পর এটি দুর্বল হয়।

সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা নাগাদ ঝড়টি ফিলিপিন্স ছেড়ে যাবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। ঝড়টি যে পথ দিয়ে যাওয়ার কথা সেসব জায়গার চুয়াত্তর হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।


কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন রাজধানী ম্যানিলায় ভয়াবহ বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

'আমার মনে হয় অন্তত এ যাত্রায় আমাদের ভাগ্য ভালই', সোমবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস।

তিনি বলেন, “এটা স্পষ্ট যে গত দুদিন ধরে আমরা যা করেছি তা প্রস্তুতি হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটা এখনো শেষ হয়নি। আমরা তখনই বিশ্রাম নেব যখন সরিয়ে নেয়া বেশিরভাগ মানুষ তাদের বাড়ি ফিরে যেতে পারবে।”

মিস্টার মার্কোস জরুরি সরবরাহের জন্য আকাশপথ ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেসব জায়গা সবচেয়ে বেশি দুর্গত সেসব জায়গায় পরিস্কার করার যন্ত্রপাতি পাঠাতে বলেছেন।

ম্যানিলার পূর্বাঞ্চলে কুইজন প্রদেশে মৎসজীবীদের আগে থেকেই সাগরে যেতে বারণ করা হয়েছে। কিছু এলাকা বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিমান এবং ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। লুজনে প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মারকোস সরকারি সব কাজ স্থগিত করেছেন। স্কুলের ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ম্যানিলার উত্তর-পূর্বে দিনগালান শহরে এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের বাসিন্দাদের বলা হয়েছে তারা যেন আশ্রয়কেন্দ্রে যেয়ে আশ্রয় নেয়।


একজন বাসিন্দা এএফপিকে বলেছেন, " আমরা উপকূল থেকে দূরে আছি, তবে আমার চিন্তা হচ্ছে পাহাড়ী ঢল নিয়ে"। 

সোমবার দেশটির স্টক একচেঞ্জ স্থগিত করা হয়েছে।


মি. মার্কোস দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে দেশটির সব জ্বালানি নির্ভর শিল্পকে সর্বোচ্চ সতর্কতা নিতে বলেছেন।

ফিলিপিন্সের রেড ক্রসের চেয়ারম্যান ডিক গর্ডন বলেছেন হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবীরা নদীর পানির উচ্চতা, সেতু, পর্বত এই সব স্থান পর্যবেক্ষণ করবে যাতে করে ভূমিধ্বস হলে উদ্ধার অভিযানে কোন বাধা না আসে। তিনি বলেন কোথায় সাহায্য প্রয়োজন হবে সেটার তথ্য জানা কঠিন হতে পারে।

প্রশান্ত মহাসাগরে সাত হাজারের বেশি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে ফিলিপিন্স, তাই এখানে ঝড়ের প্রকোপ বেশি। এখানে বছরে প্রায় ২০টার মত ঝড় হয়।

দুই হাজার একুশ সালের ডিসেম্বরে টাইফুন রাই আঘাত হানলে দেশটিতে চারশ'র মত মানুষ মারা যায়। ২০১৩ সালে টাইফুন হেইয়ান এ যাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়ে ছয় হাজার তিনশ মানুষ মারা যায়।