২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১০:২৪:০৪ পূর্বাহ্ন


রাজশাহীতে সার সংকটে আলু চাষিরা
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-১১-২০২২
রাজশাহীতে সার সংকটে আলু চাষিরা রাজশাহীতে সার সংকটে আলু চাষিরা


রাজশাহীতে আলু মৌসুমে পটাশ সারের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ৭৫০ টাকা মূল্যের এক বস্তা পটাশ সার কৃষকদের কিনতে হচ্ছে ১১-১২’শ টাকা দরে। তার পরেও চহিদা মতো সার পাচ্ছেন না কৃষকরা। লাইনে দাঁড়িয়ে সার কিনতে হচ্ছে হচ্ছে তাঁদের। ফলে এবার আলু চাষ ব্যাহত হওয়ার সঙ্কা দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে। আবার সার পেলেও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হওয়ার কারণে আলু চাষ করে কৃষকরা কতটুকু লাভবান হবেন সে নিয়েও তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

তবে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারের কোনো সঙ্কট নাই। অতিরিক্ত সার প্রয়োগ রোধে কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে। চাহিদামতো সার প্রাপ্তিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে চলতি বছর আলু চাষ কমলেও প্রায় দ্বিগুন বাড়বে সরিষা চাষ। ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে চলতি বছর সরিষা চাষে কৃষি বিভাগ বেশি নজরদারি করছে বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র মতে, এ বছর রাজশাহীতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছর ছিল ৩৮ হাজার ৫৪৩ হেক্টর জমিতে। ফলে গত বছরের তুলনায় এবার এক হাজার ৩৬৩ হেক্টর জমিতে আলু চাষ কম হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। যদিও গত এক সপ্তাহ আগে থেকে আলু চাষ শুরু হয়েছে মাত্র। এরই মধ্যে রাজশাহীতে ১৮৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। চলতি নভেম্বর মাসজুড়েই আলু চাষের মহোসব চলবে। সেই হিসেবে হাতে যে কয়দিন সময় আছে, এরই মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়ে যাবে বলেও আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

রাজশাহীর তানোর উপজেলা সারাদেশের মধ্যে আলু চাষে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। আমশো গ্রামের তুষার আহমেদ বলেন, ‘এ বছর আমি ৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করবো। এরই মধ্যে জমি প্রায় ঠিকঠাক করেছি। কিন্তু পটাশ সার ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। আলু চাষের জন্য পটাশই বেশি লাগে। কৃষি অফিসে লাইন ধরে দুই বস্তা পটাশ পাইছি ৭৫০ টাকা করে। আর ৫ বস্তা সার কিনেছি ১২’শ টাকা দরে অন্য জায়গা থেকে।’

জানতে চাইলে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, ‘সারের কিছুটা সঙ্কট আছে। তবে এটি থাকবে না। আমরা চেষ্টা করছি আলু চাষিদের মাঝে সঠিকভাবে সার পৌঁছানোর জন্য।’

এদিকে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, ‘সারের কোনো সঙ্কট নাই। পর্যাপ্তÍ সার আছে। তার পরেও আমরা কৃষকদের অতিরিক্ত সার প্রয়োগ রোধে নিরুৎসাহিত করছি। অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করে জমির ক্ষতি এবং অর্থ ব্যয় ছাড়া ফলন বেশি হয় না। ফলে যতটুকু আলু চাষে জমিতে সার প্রয়োজন আমরা ততটুকুই ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করতে চেষ্টা চালাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, এবছর ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে আমরা সরিষা চাষে মনোযোগ দিয়েছি। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর সরিষা চাষের লক্ষ্যামাত্রা রাজশাহীতে প্রায় দ্বিগুন বেড়েছে। এরই মধ্যে সরিষা চাষ শুরু হয়েছে। আলু ও সরিষা দুটি ফসলই এক সাথে চাষ হয়। ফলে এবার আলুর চেয়ে সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’