০৪ মে ২০২৪, শনিবার, ০৭:০৪:৪৬ অপরাহ্ন


যে দোষ প্রকাশ করলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না
ধর্ম ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৫-২০২৩
যে দোষ প্রকাশ করলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না ফাইল ফটো


নিজের দোষ নিজে প্রকাশ করতে নেই। বরং তা গোপন রাখা জরুরি। কারণ মহান আল্লাহ তাআলা মানুষের দোষ গোপন রাখেন। দোষ গোপন থাকলেই পাওয়া যায় ক্ষমা ও মুক্তি। কিন্তু কোনো মানুষ যদি নিজে দোষ করে সে দোষ আবার নিজেই প্রকাশ করে দেয় তবে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করেন না। বরং দোষ গোপন রাখলে মিলবে ক্ষমা ও নাজাত। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনই ঘোষণা দিয়েছেন-

১. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, আমার সব উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ছাড়া। আর নিশ্চয়ই এটা বড়ই অন্যায় যে, কোনো লোক রাতের বেলা অপরাধ করলো যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগলো, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটালো যে, আল্লাহ তার কর্ম (দোষ) লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেওয়া আবরণ খুলে ফেললো।’ (বুখারি, মুসলিম)

এ হাদিস থেকে বুঝা গেলো, মহান আল্লাহ বান্দার কোনো দোষ নিজ থেকে প্রকাশ করেন না। বরং তিনি বান্দার গোপন দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখেন। এ কারণেই নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করা হবে; তারা ছাড়া, যারা নিজ নিজ দোষ প্রকাশ করে দেয়।’

নিজ দোষ গোপন রাখার উপকারিতা

২. হজরত সাফওয়ান ইবনে মুহরিজ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি ‘নাজওয়া’র (কেয়ামতের দিন আল্লাহ ও তাঁর মুমিন বান্দার মধ্যে গোপন আলোচনা) ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কী বলতে শুনেছেন?

তিনি (ইবনে ওমর) বললেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের এক ব্যক্তি তার প্রভুর এত কাছাকাছি হবে যে, তিনি তার উপর তাঁর নিজস্ব আবরণ টেনে দিয়ে দুইবার জিজ্ঞাসা করবেন- ’তুমি এই এই কাজ করেছিলে?’

সে (মুমিন ব্যক্তি) বলবে- ’হ্যাঁ’।

আবার তিনি জিজ্ঞাসা করবেন- ‘তুমি এই এই কাজ করেছিলে?’

সে বলবে- ‘হ্যাঁ’। এভাবে তিনি (আল্লাহ) তার (বান্দার) স্বীকারোক্তি গ্রহণ করবেন।

এরপর বলবেন, ‘আমি দুনিয়াতে তোমার এ(দোষ)গুলো লুকিয়ে রেখেছিলাম। আজ আমি তোমার এসব গুনাহ ক্ষমা করে দিলাম।’ (বুখারি)

সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ কত মহান। চিন্তাই করা যায় না যে, মহান আল্লাহ বান্দার দোষ শুধু গোপনই রাখবেন না; স্বীকারোক্তি নেওয়ার পর আবার ক্ষমাও করে দেবেন। বান্দার জন্য এরচেয়ে বড় রহমত আর কী হতে পারে!

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নিজেদের একান্ত গোপন দোষ-ত্রুটি প্রকাশ না করা। অপ্রকাশিত দোষগুলো গোপন রাখা। তবেই আল্লাহ তাআলা এসব গোপন দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করে দেবেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিজেদের অপ্রকাশিত দোষগুলো গোপন রাখার তাওফিক দান করুন। কোনো দোষ বা গুনাহের কথা কারো প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত ও নাজাত দান করুন। আমিন।