২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ০১:৪৩:৩০ পূর্বাহ্ন


আইএমএফের ঋণ দেশের দুই মাসের রেমিট্যান্সের সমান: অর্থমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৭-২০২৩
আইএমএফের ঋণ দেশের দুই মাসের রেমিট্যান্সের সমান: অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। ছবি: সময় সংবাদ


আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে যে ঋণ নেয়া হয়েছে, সেটি খুব বড় অঙ্ক নয় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেছেন, এ ঋণ বাংলাদেশের দুই মাসের রেমিট্যান্সের সমান।

জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) এক্সিকিউটিভ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়ামাদা জুনিছির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। 

জাইকার নতুন কোনো সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের প্রকল্পগুলো বর্তমানে কী অবস্থায় আছে, তারা তা দেখতে এসেছে। কিছু কিছু নতুন প্রকল্পও আসবে। নতুন যে প্রকল্পগুলো আসবে, সেগুলোর অধিকাংশই প্রযুক্তি সম্পর্কিত।’

বাজেটে জাইকার সহায়তা থাকার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বাজেটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে যেসব জায়গায় হাত দিতে হবে; কিছু কিছু জায়গা আছে, সেখানে তারা আমাদের সহায়তা করতে পারে।’

ঠিক কবে নাগাদ আমরা কৃচ্ছ্রতা থেকে বের হতে পারবো- সংবাদকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোন জায়গায় আপনি খারাপ দেখেছেন। এ বছর আমেরিকায় তিনটি ব্যাংক ব্যর্থ হয়েছে। এতে বোঝা যায়, বিশ্ব অর্থনীতি কোন জায়গায় গেছে। বৈশ্বিক অর্থনীতি আপনারা যদি বিবেচনা করেন, তাহলে আপনাকে মেনে নিতে হবে যে আমাদের অর্জন তুলনামূলক অন্যদের চেয়ে অনেক ভালো।’

এসময়ে আইএমএফের ঋণের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আইএমএফ যে ঋণ দিয়েছে, তা শোধ করা কোনো ব্যাপার না। তা এই যে কয়েকজন এখানে আছেন, আমরা নিজেরাই শোধ দিতে পারব। আমরা কয়েকজন মিলেই (শোধ দিতে পারব)। আইএমএফ নামটা অনেক বড়ো। কিন্তু কী দিয়েছে, জানেন? সেটি আমাদের দুই মাসের রেমিট্যান্সের সমান। দুই মাসের রেমিট্যান্স হলো তাদের কাছ থেকে পাওয়া আমাদের ঋণ।’

তাহলে কী এ ঋণ নেয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটি আমরা বুঝতে পারিনি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কতদিন থাকবে, যেভাবে আমাদের ঘাটতি পড়ছিল। তাতে আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমরা তো তখন এটি বুঝতে পারিনি।’

মূল্যস্ফীতির হার না কমার বিষয়ে আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, আমরা যখন কাজ শুরু করেছিলাম তখন এ হার ১২ দশমিক ৩ শতাংশ ছিল। কিন্তু তার চেয়ে তো বাড়েনি।

 তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ কী কেউ না খেয়ে আছে। আমরা কেবল টাকার অঙ্ক দিয়ে এটি কমাচ্ছি না। এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে, যাদের কাছে খাবার নেই, তাদের খাবার দিতে হবে। যাদের খাবার দিচ্ছি, তাদের সেটি কম দামে দিতে হবে। তাদের ভ্যাট মওকুফ করতে হবে। ইনকাম ট্যাক্স তাদের কম ধরতে হবে। এভাবে আমরা সেই কাজটি করি।’

 এসময় দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেশি থাকার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সারা বছর কেনেননি কেন? একদিনে তো খেতে কাঁচা মরিচ তৈরি হয়ে যাবে না।’

 জিনিসপত্রের দাম কি সহনীয় আছে, এমন প্রশ্নে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কোনটা অসহনীয় আছে?’

 তিনি আরও বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। আমরা পৃথিবীর বাইরে না। আমাদের হাতে কিছু করার নেই। আমাদের হাতে যা আছে, আমরা সেটির পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার করছি। এতে করে আমরা ভালো অবস্থানে আছি। তবে আরও ভালো অবস্থানে রাখতে পারলে আমরা খুশি হতাম।’

 বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রতিবেদন নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের গত কয়েক বছরের সামষ্টিক অর্থনীতির দৃশ্যপট আপনারা সেখানে দেখতে পাবেন। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে জিডিপিতে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ২০২১-২০২২ সালে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, ২০২২-২০২৩ সালে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।

 উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গত বছরের জুলাই মাসে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আবেদন করার পর শর্তসাপেক্ষে ঋণ দিতে রাজি হয় আইএমএফ। ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে ঋণদাতা সংস্থাটি। ফেব্রুয়ারি মাসে এ ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।