৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:৫৩:২৫ পূর্বাহ্ন


ঈদের আগে মাংসের বাজার অস্থির!
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৪-২০২৪
ঈদের আগে মাংসের বাজার অস্থির! ঈদের আগে মাংসের বাজার অস্থির!


অস্থির হয়ে ওঠেছে মাংসের বাজার। রাজধানীতে আবারও বাড়ছে গরু, খাসি ও মুরগির দাম। সংশ্লিষ্টদের দাবি, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও সরবরাহ ঘাটতির কারণেই দাম বাড়তি।

নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা যেন থামছেই না। ঊর্ধ্বমুখী প্রায় সব পণ্যের দাম। এর প্রভাবে বাড়ছে মাংসের দামও। সপ্তাহ ব্যবধানে শুধু দেশি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকার ওপরে। আর ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া গরু ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকার বেশি।

বাজারে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি ৩৩০-৩৭০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০-৭০০ টাকা, ব্রয়লার ২৩০-২৬০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০-৩৫০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।

ক্রেতারা বলেন, ঈদের আগে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে; তবুও দেয়া হচ্ছে সংকটের অজুহাত। 

আর বিক্রেতারা জানান, ঈদের কারণে চাহিদা বেড়েছে মাংসের; যা সরবরাহের তুলনায় অনেক বেশি। এতে বাড়ছে দামও। কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের মুরগি বিক্রেতা রিপন বলেন, ‌‌‘মুরগির উৎপাদন খরচ বেড়েছে। পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে বেড়েছে চাহিদাও। সব মিলিয়ে মুরগির দাম বাড়তি।’

কারওয়ান বাজারের মামা-ভাগিনা চিকেন ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা মো. জয়নাল জানান, ঈদের কারণে মুরগির চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়েছে। তাছাড়া বেড়েছে মুরগির উৎপাদন খরচও। ফলে ঈদের পরও দাম কমবে কি-না, বলা মুশকিল।

 দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার সময় সংবাদকে বলেন, ‘করপোরেট গ্রুপগুলোর কৃত্রিম সংকটে মুরগির বাচ্চা ক্রয় করতে না পেরে উৎপাদন থেকে বাধ্য হয়ে সরে যাচ্ছেন প্রান্তিক খামারিরা। মুরগির বাজারে এখন বেশিরভাগ মুরগি করপোরেট গ্রুপগুলোর। বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। ফলে বাজারে মুরগির দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।’

 প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন খরচ বাড়ছে জানিয়ে বিপিএ সভাপতি আরও বলেন, একটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে খরচ হয় ২৮ থেকে ৩০ টাকা। অথচ প্রান্তিক খামারিদের সেই বাচ্চা কিনতে হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির ফিড উৎপাদন করতে খরচ হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা; কিন্তু প্রান্তিক খামারিদের সেই ফিড কিনতে হয় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আর এক কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করতে খরচ হয় ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা।

এদিকে, আবারও বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। কোথাও কোথাও বেড়েছে আরও বেশি দামে।

এছাড়া দাম বেড়েছে খাসির মাংসেরও। বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত।

 মাংস বিক্রেতারা বলছেন, গরুর দাম বাড়ায় বাড়ছে মাংসের দামও। যারা কম দামে মাংস বিক্রি করেছে এতদিন, তারাও এখন দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা বলেন, গরুর দাম বেড়েছে; তাই মাংসের দামও বেড়েছে।

 ক্রেতারা জানান, খলিলের কারণে দাম কিছুটা কমেছে। সে মাংস ব্যবসা ছেড়ে দেয়ায় আবারও বাড়ছে দাম। সরকারের উচিত দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া।

 এদিকে, সম্প্রতি গরুর মাংসের দাম ব্যবসায়ীদের ওপর ছেড়ে দিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘খলিলসহ রাজধানীর আলোচিত তিন ব্যবসায়ী এতদিন লোকসান দিয়ে গরুর মাংস বিক্রি করেছেন। গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে মাংসের দামও বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে তারা কী করবেন, এটি সম্পূর্ণ তাদের সিদ্ধান্ত।’