০৬ মে ২০২৪, সোমবার, ০৩:০৬:০৬ পূর্বাহ্ন


নিয়ামতপুরে সাপের কামড়ে ২ শিশুর মৃ’ত্যু
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৮-২০২৩
নিয়ামতপুরে সাপের কামড়ে ২ শিশুর মৃ’ত্যু ফাইল ফটো


নওগাঁর নিয়ামতপুরে সাপের কামড়ে সাদিয়া খাতুন (৯), আসমা আক্তার সুইটি (১৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপর এক শিশু শিক্ষার্থী মোবাস্বিরা খাতুন (১১) নিজ বাড়িতে কবিরাজের কাছে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এমন ঘটনা ঘটেছে সোমবার ৩১ জুলাই দিবাগত রাত ২ টার দিকে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের পুস্তইল সাহাপুর রিয়াজুল জান্নাহ মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসায়। মৃত সাদিয়া খাতুন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের পানিহারা গ্রামের নাজিম বাবুর একমাত্র মেয়ে এবং আসমা আক্তার সুইটি গোমাস্তাপুর উপজেলার পূর্ব ব্রাম্মন গ্রামের আবু সায়েমের একমাত্র মেয়ে।

তবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের দাবি মাদ্রাসায় “জিনের আছর” রয়েছে। গত বছর “মাথাব্যথার ” কারণে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগও তোলেন তাঁরা।

মাদ্রাসার হুজুর জুলাইখা জানান, মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ জন। মাদ্রাসা করার পর থেকেই কোন না কোন সমস্যা আসতেই থাকে। মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা হয়েছে প্রায় তিন বছর। এই তিন বছরে শিশু শিক্ষার্থীদের মাথাব্যথা, শরীর ঝিমঝিম করা, রাতের বেলা বাচ্চারা ঘুমিয়ে গেলে ঘুমের মধ্যে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করা এমন ঘটনা প্রায় ঘটে। পরে মাদ্রাসা কমিটির মাধ্যমে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক করে নেওয়া হয়েছে। বাচ্চাদের সাথে এমন ঘটনা ঘটলেও হুজুর জুলাইখার সাথে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি বলে জানান তিনি। সোমবার রাতে শিক্ষার্থীদের চিৎকারে ঘুম থেকে জেগে উঠি, এক শিক্ষার্থী বলে সাপ কামড় দিয়েছে এমন কথা শুনে সকল শিক্ষার্থীকে ডাক দিই। কিছু ক্ষন পর আরও দুটি শিক্ষার্থী বলে আমাদের ও সাপ কামড় দিয়েছে। এক পর্যায়ে মাদ্রাসা কমিটির মাধ্যমে অভিভাবকদের জানানো হয়। তবে তাদের মৃত্যু আমি মেনে নিতে পারছি না।

শিক্ষার্থী মোবাস্বিরা খাতুনের বাবা মোকলেছুর রহমান বলেন, মাদ্রাসায় “দুশাস্ত জিনের” আছর রয়েছে। বাচ্চাদের বিভিন্ন সময় স্বপ্নে দেখাতো এই মাদ্রাসা ছেড়ে চলে যেতে। তা না হলে তাদের মেরে ফেলা হবে। আবার অনেক সময় রাতের বেলা মাদ্রাসার বাইরে ডাকে কিন্তু বের হয়ে আর কাউকে দেখা পাওয়া যায় না। গত বছর এই সময়েই মাথাব্যথা নিয়ে দুজন শিক্ষার্থী প্রাণ দিয়েছে। মেয়ে সুস্থ হলে আর ওই মাদ্রাসায় পাঠাবো না।

অত্র এলাকার কবিরাজ একরামুল হক বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর কবিরাজি করছি। মাদ্রাসার জায়গাটা অনেক দুশান্ত। জিনের বসবাস রয়েছে এখানে। বাচ্চাদের সব সময় ভয়ের মধ্যে রাখতো তাঁরা।

নিয়ামতপুর থানা অফিসার ইন চার্জ মাইদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনজন শিক্ষার্থীকে সাপে কামড়েছে। তার মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অপরজন চিকিৎসাধীন। পরিবারের কারও কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।