০৫ মে ২০২৪, রবিবার, ০৫:০১:৩২ পূর্বাহ্ন


বৃষ্টি ও পাহাড় ধসে বান্দরবানে ৩৩৭ কিমি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৮-২০২৩
বৃষ্টি ও পাহাড় ধসে বান্দরবানে ৩৩৭ কিমি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক। ছবি: সময় সংবাদ


কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড় ধসে বান্দরবানের সাত উপজেলায় ৩৩৭ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে কিছু কিছু সড়ক আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বেশির ভাগ সড়ক পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হিসাব মতে, এসব সড়ক মেরামতে ব্যয় হবে ২২২ কোটি টাকা।

সরেজমিন দেখা গেছে, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ের মাটি ধসে জেলার লামা, রুমা ও থানচিসহ সবগুলো উপজেলায় কমবেশি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কে তৈরি হয়েছে ছোট বড় গর্ত, দেখা দিয়েছে ফাটল। কোথাও কোথাও ধসে গেছে সড়ক। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় নষ্ট হয়ে গেছে নির্মাণাধীন সড়ক। শুধু তাই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ড্রেন গাইড ওয়াল ও সড়ক বাঁধ।

প্রধান সড়কের চেয়ে বিভিন্ন উপজেলার সংযোগ সড়ক ও অভ্যন্তরীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশি। ফলে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বিভিন্ন সড়ক। আর ঝুঁকি জেনেও প্রয়োজনের তাগিদে এসব সড়কে যাতায়াত করছেন স্থানীয়রা।

ফারুক পাড়ার বাসিন্দা জিং ময় বম বলেন, ‘রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় মাটি ধসে গেছে। খুব ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তাগুলো মেরামত না করলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

চিম্বুক সড়কে চলাচলকারী মাহিন্দ্র চালক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তাগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ, দ্রুত মেরামত করা না হলে কিছু দিন পর চলাচল করা আরও কঠিন হয়ে যাবে। তাই রাস্তাগুলো দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন।’

বিভিন্ন সরকারি দফতরের তথ্য মতে, জেলায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সড়ক রয়েছে ৯০০ কিলোমিটার। এরমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩০০ কিলোমিটার, যা মেরামতে ব্যয় হবে ১৫০ কোটি টাকা। সড়ক বিভাগের ৪৩০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫ কিলোমিটার, যা মেরামতে ব্যয় হবে ৩০ কোটি টাকা। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ২২৭ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এরমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২ কিলোমিটার, যা মেরামতে ব্যয় হবে ৪২ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দীন বলেন, ‘বৃষ্টি ও পাহাড় ধসে আমাদের অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সাময়িক মেরামত করে যান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে।  পরবর্তীকালে আমরা সড়কগুলো স্থায়ীভাবে মেরামত করব।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘যেগুলো মেরামত করা সম্ভব হয়েছে সেগুলো মেরামত করে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে যেগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, নতুন বরাদ্দ না আসা পর্যন্ত সেগুলো সংস্কার করা সম্ভব হবে না।’

গত ৪ আগস্ট থেকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানে দেখা দেয় ভয়াবহ বন্যা। এতে তলিয়ে যায় বিভিন্ন সড়ক। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে পাহাড় ধসে বন্ধ হয়ে যায় বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ। পরে মাটি সরিয়ে ও মেরামত করে বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করা হলেও এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে রুমা ও থানচির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ।