০৭ মে ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৬:১০:৫১ পূর্বাহ্ন


নবিজির (সা.) হাসি-রসিকতা
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৯-২০২৩
নবিজির (সা.) হাসি-রসিকতা ফাইল ফটো


নবিজি (সা.) মাঝে মাঝে রসিকতা করতেন। তবে তিনি কখনও মিথ্যা বলতেন না। কারো মনে কষ্টও দিতেন না। তার রসিকতা হতো নির্দোষ।

আনাস (রা.) বলেন, একদিন এক ব্যক্তি নবিজির (সা.) কাছে সওয়ার হওয়ার জন্য একটি উট চাইতে এলো। নবিজি (সা.) বললেন, আমি তোমাকে একটি উষ্ট্রীর বাচ্চা দেবো। লোকটি অবাক হয়ে বললো, উষ্ট্রীর বাচ্চা দিয়ে আমি কী করবো! বাচ্চার পিঠে কি সওয়ার হওয়া যাবে! রাসুল (সা.) বললেন, প্রত্যেকটি উটই কি কোনো উষ্ট্রীর বাচ্চা নয়? (সুনানে আবু দাউদ, সুনানে তিরমিজি)

প্রখ্যাত মুফাসসির ইবনে কাসির তার তাফসির-গ্রন্থে হাসান বসরি (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন, একবার এক বৃদ্ধা রাসুলের (সা.) সাথে দেখা করে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকে জান্নাতাবাসী করেন!

রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন, হে অমুকের মা! জান্নাতে তো কোনো বৃদ্ধা ঢুকতে পারবে না।

তার কথা শুনে বৃদ্ধা কাঁদতে কাঁদতে ফিরে চললেন। রাসুল (সা.) সাহাবিদের বললেন, তাকে বলো, তিনি বৃদ্ধা অবস্থায় জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। জান্নাতে প্রবেশ করার আগে আল্লাহ তাকে তরুণী বানিয়ে দেবেন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

اِنَّاۤ اَنۡشَاۡنٰهُنَّ اِنۡشَآءً فَجَعَلۡنٰهُنَّ اَبۡکَارًا

নিশ্চই আমি তাদেরকে বিশেষভাবে সৃষ্টি করবো, তাদেরকে বানাবো কুমারী। (সুরা ওয়াকিয়া: ৩৫, ৩৬)

আনাস (রা.) বলেন, এক গ্রাম্য ব্যক্তি নবিজির (সা.) কাছে আসতেন। তার নাম ছিলো যাহেদ। তিনি আসার সময় নবিজির (সা.) জন্য গ্রাম থেকে কিছু উপহার নিয়ে আসতেন। ফিরে যাওয়ার সময় নবিজিও (সা.) তাকে শহরে উপলব্ধ কিছু হাদিয়া দিয়ে দিতেন। নবিজি (সা.) বলতেন, যাহের আমাদের গ্রাম, আমরা তার শহর।

একদিন যাহেদ মদিনার বাজারে জিনিসপত্র বিক্রি করছিলেন। নবিজি (সা.) গিয়ে পেছন থেকে এমনভাবে তাকে জড়িয়ে ধরলেন যে তিনি পেছনে তাকাতে পারছিলেন না। তিনি বললেন, কে? আমাকে ছাড়ুন! কিন্তু যখন তিনি বুঝতে পারলেন নবিজি (সা.) তাকে ধরেছেন, তখন তিনি নবিজির বুকের সাথে আরও লেপ্টে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। নবিজি (সা.) বললেন, এ গোলামকে কে কিনবে? যাহেদ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমাকে বিক্রি করে তেমন মূল্য পাবেন না। (তিনি ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ ও দেখতে কদাকার) নবিজি (সা.) বললেন, কিন্তু আল্লাহর কাছে তুমি কম মূল্যবান নও! (মুসনাদে আহমদ)

এভাবেই রাসুল (সা.) মাঝে মাঝে হাসি-ঠাট্টা ও রসিকতা করতেন। কিন্তু তিনি কাউকে কষ্ট দিতেন না বা মিথ্যা বলতেন না। আমরা হাসি-রসিকতার ক্ষেত্রে নবিজিকে (সা.) অনুসরণ করতে পারি।