০৭ মে ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৬:০৩:০৩ পূর্বাহ্ন


রাসুলের (সা.) বিনম্র চরিত্র-মাধুর্য
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৯-২০২৩
রাসুলের (সা.) বিনম্র চরিত্র-মাধুর্য ফাইল ফটো


রাসুল (সা.) ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও কোমলহৃদয় মানুষ। নিজের পরিবার-পরিজন, অধীনস্থ সেবক-কর্মচারী ও সাহাবিদের প্রতি তিনি ছিলেন অত্যন্ত সদয়। সবার কষ্টে তিনি কষ্ট পেতেন। এমন কি তার শত্রুরা মৃত্যুর পর জাহান্নামে গিয়ে পড়বে এ চিন্তায়ও তিনি ব্যাকুল হয়ে পড়তেন। কোরআনে নবিজির এ গুণের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন,

لَقَدۡ جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ عَزِیۡزٌ عَلَیۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِیۡصٌ عَلَیۡکُمۡ بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ رَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ

তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে একজন রাসুল এসেছেন, তোমাদের জন্য যা পীড়াদায়ক তা তাকে কষ্ট দেয়। তিনি তোমাদের কল্যাণকামী, মু’মিনদের প্রতি করুণাসিক্ত, বড়ই দয়ালু। (সুরা তওবা: ১২৮)

হজরত আনাস (রা.) ছিলেন রাসুলের কর্মচারী বা সেবক। তিনি বলেন, আমি ১০ বছর রাসুলের (সা.) খেদমত করেছি; কিন্তু এ সময়ের মধ্যে তিনি কখনো আমার কোন কাজে অসন্তুষ্ট হয়ে ‘উহ’ শব্দটি পর্যন্ত করেননি। আমি করেছি এমন কোন কাজের ব্যাপারে তিনি কখনো জিজ্ঞেস করেননি যে, কেন করেছি? আর না করার ব্যাপারেও তিনি কখনো জিজ্ঞেস করেননি যে, কেন করোনি? চরিত্র মাধুর্যে তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। কোন রেশমী কাপড় বা কোন বিশুদ্ধ রেশম বা অন্য কোন এমন নরম জিনিস স্পর্শ করিনি, যা রাসুলের (সা.) হাতের তালুর চেয়ে নরম। আমি এমন কোন মিশক বা আতরের সুবাস পাইনি, যা রাসুলের (সা.) ঘামের ঘ্রাণ থেকে অধিক সুগন্ধিময়। (শামায়েলে তিরমিজি)

নবিজির সহধর্মিণী আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) তার কোনো স্ত্রী বা কর্মচারির ওপর কখনও হাত ওঠাননি। আল্লাহর পথে জিহাদ ছাড়া তিনি কারো ওপরই হাত ওঠাননি। যে তার ক্ষতি করেছে, তার থেকেও প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। (সহিহ মুসলিম)

আয়েশা (রা.) আরও বলেন, রাসুল (সা.) কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কোনো রকম অশোভনীয় কথা বলতেন না। বাজারেও তিনি উচ্চৈস্বরে কথা বলতেন না। মন্দ আচরণের বদলায় তিনি মন্দ আচরণ করতেন না; বরং ক্ষমা করে দিতেন। তারপর কখনো তা উল্লেখও করতেন করতেন না। (শামায়েলে তিরমিজি)

সাহাবি ও উত্তম ব্যক্তিদের সাথে তো বটেই, নবিজি (সা.) তার শত্রু, খারাপ ও দুরাচারী লোকদের সাথেও তিনি বিনয়ী ও নম্র আচরণ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, একদিন এক ব্যক্তি রাসুলের (সা.) সাথে দেখা করার অনুমতি চাইল। আমি সে সময় তার কাছে বসে ছিলাম। তিনি বললেন, এ অত্যন্ত নিকৃষ্ট প্রকৃতির লোক! তারপর তাকে যখন আসার অনুমতি দেয়া হলো, তিনি তার সাথে খুব নম্রভাবে কথা বললেন। লোকটি বের হয়ে গেলে আমি বললাম, লোকটি সম্পর্কে এরকম বললেন, আবার তার সাথে নম্র ব্যবহার করলেন। রাসুল (সা.) বললেন, আয়েশা! যে লোকের খারাপ ব্যবহারের জন্য লোকজন তাকে পরিহার করে এবং তাঁর থেকে দূরে থাকে, সে সবচেয়ে খারাপ লোক। (শামায়েলে তিরমিজি)