০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:৪২:৩৪ অপরাহ্ন


জাতীয় সংগীত না গেয়ে অভিনব প্রতিবাদ!
ক্রীড়া ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০২-২০২৪
জাতীয় সংগীত না গেয়ে অভিনব প্রতিবাদ! ছবি: সংগৃহীত


২০২৩ সালের শেষ দিকে দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আফ্রিকার দেশ কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে এখন চলছে রীতিমতো অরাজকতা। রাজনৈতিক বিভেদ খুবই খারাপ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সে সঙ্গে সরকারকে এখন পর্যন্ত পূর্বাঞ্চলীয় বিদ্রোহী গ্রুপ এম২৩ এর সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতা, দ্বন্দ্ব-বিবেধ এবং বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ের কারণে এরই মধ্যে দেশটিতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। দেশের চলমান এসব অস্থিরতার সময়ে কঙ্গো জাতীয় ফুটবল দল আইভরি কোস্টে খেলতে এসেছে আফ্রিকান কাপ অব নেশন্স। শুধু তাই নয়, টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালেও উঠেছে তারা।

‘দ্য লেপার্ড’ বা চিতা নামে পরিচিত কঙ্গো জাতীয় ফুটবল দল। দলটির ফুটবলাররা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করে, আবিদজানে স্বাগতিক আইভরি কোস্টের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে নিজেদের দেশে অস্থির পরিস্থিতির শিকার হয়ে হতাহত হয়েছে যারা, তাদের প্রতি এবং দেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে তারা ম্যাচের আগে জাতীয় সংগীত গাইবে না।

জাতীয় সংগীত না গাইলেই বিষয়টা সবার নজরে আসবে এবং কঙ্গোতে কী হচ্ছে সে বিষয়ে জানতে চাইবে সারা বিশ্ব। এ লক্ষ্যেই মূলত ম্যাচ শুরুর আগে জাতীয় সংগীত না গাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। সিদ্ধান্ত মোতাবেকই জাতীয় সঙ্গীত বাজার সময় তারা তাতে কণ্ঠ না মিলিয়ে ডান হাতে মুখ ঢেকে বাম হাতের দুই আঙ্গুল কানের ওপর রেখে নিজেদের প্রতিবাদ জানায় এবং কঙ্গোর জনগনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে।

হাত দিয়ে মুখ বন্ধ রাখা এবং বাম হাতের দুই আঙ্গুল কানের ওপর রেখে ২০২২ সাল থেকেই এক ধরনের প্রতিবাদের ভাষা তৈরি করেছেন কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের স্ট্রাইকার সেডরিক বাকামবু। প্রতিটি গোল করার পরই তিনি এভাবে উদযাপন করতেন। তার এই প্রতিবাদের ভাষার অর্থ হচ্ছে- ‘কঙ্গো রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রচুর মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু দেশটিতে সন্ত্রাস-সহিংসা বন্ধে কেউ কোনো কথা বলছে না।’

কঙ্গো জাতীয় দলের ফুটবলাররা একই সঙ্গে নিজেদের দেশে সহিংসতায় মৃত মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে মাঠে নামে কালো আর্মব্যান্ড পরে।

আইভরি কোস্টের কাছে ১-০ গোলে হেরে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র। ম্যাচের পর দেশটির ফরাসী কোচ সেবাস্তিয়েন ডিজাব্রি খেলোয়াড়দের এই পদক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘এটা ছিল একটা বার্তা এবং সহিংসতায় নিহত ব্যাক্তিদের প্রতি সহমর্মিতা। মানুষকে এটা জানানো যে, দেশটিতের পূর্বাঞ্চলে সাধারণ মানুষ খুবই অনিশ্চয়তা এবং দুর্গতির মধ্যে বসবাস করছে। মানুষ এ নিয়ে খুবই হতাশ। খেলোয়াড়রাও এ নিয়ে খুব হতাশ। আমরা লড়াই করছি মূলত কঙ্গোলিজ প্রতিটি সাধারণ মানুষের জন্য। আমরা চাই তাদের মুখে হাসি ফোটাতে।’