০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:২০:৫৬ অপরাহ্ন


ফুলবাড়ী রেলগেটে তিব্র যানযটে অতিষ্ট জনসাধারণ, ফ্লাইওভারের দাবি
কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৪-২০২৪
ফুলবাড়ী রেলগেটে তিব্র যানযটে অতিষ্ট জনসাধারণ, ফ্লাইওভারের দাবি ফুলবাড়ী রেলগেটে তিব্র যানযটে অতিষ্ট জনসাধারণ, ফ্লাইওভারের দাবি


প্রতিদিন যাতায়াত করে ৩০টি ট্রেন। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে নিয়ম করে ৩০ বার ফেলা হয় রেল ক্রসিংয়ের প্রতিবন্ধকতা। ব্যস্ততম সড়কে প্রতিবন্ধকতা ফেলার সাথে সাথে রেল লাইনের দুইপ্রান্তে সৃষ্টি হয়ে দীর্ঘ এক যানযটের। ফলে নিত্য এ যানযটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন যানবাহনের চালক, যাত্রী, পথচারীসহ স্থানীয় দোকানীরা। এমনটাই চিত্র হরহামেশা দেখা মিলে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী শহরের রেল গেট এলাকায়।

সোমবার (৮ এপ্রিল) ফুলবাড়ী রেলগেট এলাকায় দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত প্রায় ৭ থেকে ৮টি ট্রেন রেলগেটটি অতিক্রম করে। প্রতিটি ট্রেন আসার পূর্বমুহুর্ত হতে অতিক্রম করা পর্যন্ত প্রায় ৮ থেকে ১০ মিনিট বন্ধ রাখা হয় রেল ক্রসিং গেটটি। ফলে রেল লেভেলের পূর্ব ও পশ্চিম উভয় প্রান্তে আটকা পড়ে শত শত বিভিন্ন আকারের যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের পরিবহন বিভাগে যোগাযোগ করে জানা যায়, সৈয়দপুর ও পার্বতীপুর থেকে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকায় সান্তাহার ও ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে চলাচল করে। ফলে এ রেলওয়ে গেট দিয়ে ২৪টি আপ-ডাউন ট্রেন চলাচল করে। ট্রেন চলাচলের সময় রেলগেট বন্ধ রাখতে হয়। এছাড়াও রয়েছে মাল ট্রেনসহ ইঞ্জিন চলাচল। প্রতিবার একটি ট্রেন এই রেলওয়ে গেট অতিক্রম করার আগে-পরে মিলিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট, কখনও তার চেয়ে বেশি সময় পর্যন্ত রেলগেট বন্ধ থাকে।

উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা কার্যালয়, মধ্যপাড়া পাথরখনি, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি, বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপূরী, রংপুরে যাতায়াতের প্রধান রাস্তা এ রেলগেট। এপারে বা ওপারে যাতায়াতের সময় ট্রেন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা ফেলা হয়। এ সময় মুমূর্ষু রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স কিংবা ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও আটকে থাকে দীর্ঘ সময়।

প্রত্যক্ষদর্শী সহকারী অধ্যাপক আলতাফ হোসেন স্বপন জানান, প্রতিদিন এই দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই চলতে হচ্ছে। এ সমস্যা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় ফ্লাইওভার নির্মাণ করা।

ফুলবাড়ী রেলওয়ে গেটের গেটকিপার মো. ওসমান গণি বলেন, রেলওয়ের এই গেটের দেখভালের জন্য তিনজন কর্মরত থাকলেও এখন তিনিসহ দুইজন দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন ট্রেন চলাচলের জন্য গড়ে ৩০ বার এই ব্যস্ততম রেলওয়ে গেট বন্ধ করতে হয়। এতে গেটের উভয় প্রান্তে ছোটবড় বিভিন্ন ধরণের অন্তত দুইশতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. টুটুল বলেন, ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে ১২টি ডাউন ও ১২ টি আপ যাত্রীবাহী আন্তঃনগর ও মেইল ট্রেন চলাচল করে। এরমধ্যে আন্তঃনগর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, মিতালী এক্সপ্রেস ও কুঁড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টোপেজ নেই ফুলবাড়ীতে। স্টোপেজ না থাকলে যাতায়াতের সময় রেল গেট ঠিকই বন্ধ রাখতে হয়। সব মিলিয়ে দিনে অন্তত ৩০ বার ব্যস্ততম রেল গেটটি বন্ধ রাখতে হয়।

পৌরসভার মেয়র মাহমুদ আলম লিটন বলেন, যানজট এখন এই শহরের ১ নম্বর সমস্যায় পরিণত হয়েছে। রেলগেটে ফ্লাইওভার নির্মাণ ছাড়া বিকল্প সমাধান নেই। এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য রেল ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি মুঠোফোনে বলেন, ফুলবাড়ী রেলগেটের যানজট নিরসনে শিগগিরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।