০৪ মে ২০২৪, শনিবার, ০৩:০১:২৮ পূর্বাহ্ন


তায়াম্মুমের বিধান নাজিল হয়েছে যেভাবে
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৪-২০২৪
তায়াম্মুমের বিধান নাজিল হয়েছে যেভাবে প্রতিকী ছবি


তায়াম্মুম ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। কোনো কারণে সরাসরি পানি ব্যবহার করে অজু বা গোসলের মাধ্যমে পবিত্র হতে না পারলে তায়াম্মুম করে পবিত্রতা অর্জন করা যায়।

কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা থেকে আসে কিংবা তোমরা স্ত্রী সম্ভোগ কর, তবে যদি পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটিতে তায়াম্মুম কর। সুতরাং তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ কর। নিশ্চয় আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। (সূরা নিসা, (৪), আয়াত, ৪৩)

মুসলমানদের ওপর আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তায়াম্মুমের বিধান কবে থেকে দেওয়া হয়েছিল এ বিষয়ে কয়েকটি মতামত রয়েছে। এ বিষয়ে এক হাদিসে উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, 

এক সফরে তিনি তার বোন আসমা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে একটি হার ধার করে নিয়েছিলেন। তিনি সেটা হারিয়ে ফেলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটা খুঁজতে এক ব্যক্তিকে পাঠান এবং তিনি তা খুঁজে পান ইত্যবসরে সালাতের ওয়াক্ত হয়ে যায়, কিন্তু তাদের নিকট পানি ছিল না। লোকেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে অভিযোগ করল। তখন তায়াম্মুমের আয়াত নাজিল হয়। 

তায়াম্মুমের বিধান নাজিলের পর সাহাবিদের সবাই অত্যধিক ‍খুশি হন। হজরত উসাইদ ইবনে হোদাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বললেন, আল্লাহ্‌ আপনাকে উত্তম প্রতিদান প্রদান করুন। যখনি কোন অপছন্দনীয় ব্যাপার আপনার উপর ঘটে গেছে, তখনি তা আপনার এবং উম্মতে মুসলিমার জন্য কল্যাণের কারণ হয়েছে। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৬, মুসলিম, হাদিস :  ৩৬৭)

তিনি খুশির আতিশায্যে বলে উঠেন, ওহে আবু বকরের বংশধর! তায়াম্মুমের এই হুকুম নাজিল হওয়া তোমাদরে প্রথম বরকত নয়, বরং তোমাদের বরকতে আরও অনেক সহজ ও সরল বিধান নাজিল হয়েছে।

কারো কারো মতে এই সফরটি ছিল বনু মুস্তালিকের যুদ্ধ থেকে ফেরার সফর।

অপর এক বর্ণনায় পাওয়া যায়, তায়াম্মুমের বিধান বনু মুস্তালিকের যুদ্ধে নাজিল হয়নি। বরং অন্য এক যুদ্ধের সফর থেকে ফেরার পথে আয়শা রা. তার হারটি হারিয়ে ফেলেন। এসময় তার হার খোঁজার জন্য কাফেলা যাত্রা বিরতি দিল। তখন আবু বকর রা. আয়শা রা.-কে বললেন, হে মেয়ে! তুমি প্রত্যেক সফরে মানুষের জন্য কষ্ট ও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াও।  এ সময় আল্লাহ তায়ালা তায়াম্মুমের আয়াত নাজিল করেন। যেখানে পানি না পাওয়ার পরিস্থিতিতে বিকল্প ব্যবস্থায় নামাজ আদায়ের বিধান দেওয়া হয়। 

তায়াম্মুমের অবকাশ এবং সহজ ব্যবস্থা অবতীর্ণ হওয়ার পর আবু বকর রা. অত্যন্ত আনন্দিত হন এবং তিনবার বলেন, হে আমার মেয়ে! নিঃসন্দেহে তুমি অত্যন্ত সৌভাগ্যবতী। (সীরাতুল মুস্তফা সা. ২/২৬৫)