২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ০২:৪২:৩৭ অপরাহ্ন


অবশেষে স্তনবৃন্তের মুক্তি! ফেসবুকে পোস্ট করা যাবে নগ্ন সেলফিও
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০১-২০২৩
অবশেষে স্তনবৃন্তের মুক্তি! ফেসবুকে পোস্ট করা যাবে নগ্ন সেলফিও ফাইল ফটো


অবশেষে উঠতে চলেছে প্রায় কয়েক দশকের পুরোনো নিষেধাজ্ঞা। ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে মুক্তি পেতে চলেছে স্তনবৃন্ত। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক চললে, শিগগিরই ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে মহিলা ও রূপান্তরকামীদের উন্মুক্ত বক্ষের ছবি পোস্ট করতে বাধা দেবে না ফেসবুক পরিচালন সংস্থা 'মেটা'।

প্রাথমিকভাবে মেটা মহিলা ও রূপান্তরকামীদের উন্মুক্ত স্তনের ছবি পোস্ট করা নিষিদ্ধ করেছিল। যে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে অসংখ্য প্রতিবাদ হয়েছে। ‘ফ্রি দ্য নিপল’, বা ‘স্তনবৃন্তকে মুক্ত করো’ আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে স্তনদানকারী মহিলারা দাবি করেন, বুকের দুধ খাওয়ানোর তো পবিত্র ছবি পোস্ট করা হলেও, ফেসবুক সেই ছবি সরিয়ে দিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে এমন আচরণ করছে যেন তাঁরা অশ্লীল চলচ্চিত্রের অভিনেতা। ২০০৮ সালেই ফেসবুকের সদর দফতরের বাইরে, উন্মুক্ত স্তনের ছবি পোস্ট করা নিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তাঁরা। সম্প্রতি, ‘মেটা ওভারসাইট বোর্ড’ এই নিয়ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ওভারসাইট বোর্ডের পক্ষ থেকে মেটা সংস্থাকে মহিলা এবং রূপান্তরকামীদের উন্মুক্ত বক্ষের ছবি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছে। এই বোর্ডে আছেন একদল শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক। মেটা সংস্থার বিষয়বস্তু-সংযম নীতির বিষয়ে পরামর্শ দেয় এই বোর্ডই। নগ্নতা এবং যৌনতার মতো প্রাপ্তবয়স্ক বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারির সময়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকে মাথায় রেখে মানদণ্ডের পরিবর্তন করতে হবে। এই বিষয়ে “স্পষ্ট, উদ্দেশ্যমূলক, মানবাধিকার মেনে চলে এমন মানদণ্ড তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যাতে এই নীতি লিঙ্গ বৈষম্যহীন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সেই দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। সবার আগে মানবাধিকারের উপর এই পরিবর্তনের কী প্রভাব পড়বে, তা মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে। কী কী সমস্যা হতে পারে এবং তার সমাধানের বিষয়ে আগে থেকে পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছে।

এক রূপান্তরকামী দম্পতি মেটার এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ওভারসাইট বোর্ডে আবেদন করেছিলেন। তদের আবেদনের ভিত্তিতেই এই সাম্প্রতিক পরামর্শ দিয়েছে বোর্ড। ওই দম্পতি অভিযোগ করেছিলেন, ২০২১ এবং ২০২২ সালে ইনস্টাগ্রামে দুটি পৃথক ছবি পোস্ট করেছিলেন। দুই ছবিতেই তাদের উন্মুক্ত বক্ষের ছবি ছিল, যদিও স্তনবৃন্ত ছিল ঢাকা। ছবির ক্যাপশনে রূপান্তরকামীদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে লেখা ছিল। দুটি পোস্টই কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘনের অপরাধে সরিয়ে দিয়েছিল মেটা। কারণ ছবি দুটিতে স্তন দেখা যাচ্ছিল। ওইদম্পতির অভিযোগের পর ওভারসাইট বোর্ড অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ওই পোস্টগুলি সরানো মেটার কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড, মূল্যবোধ বা মানবাধিকারের দায়িত্বের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আর এগুলি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, মেটার মৌলিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে।

বোর্ড বলেছে, “নীতির বৈষম্য মানুষের উপর কী প্রভাব ফেলে, সেই বিষয়ে অবশ্যই সংবেদনশীল হতে হবে মেটাকে। বোর্ড দেখেছে, প্রাপ্তবয়স্ক নগ্নতার বিষয়ে মেটার নীতিগুলি, সংস্থার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে মহিলা, রূপান্তরকামীদের অভিব্যক্তিতে আরও বেশি বাধা সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ, যেখানে মহিলারা ঐতিহ্যগতভাবে উন্মুক্ত বক্ষে গুরতে পারেন এবং যারা এলজিবিটিকিউআই+ হিসেবে চিহ্নিত, তাদের ক্ষেত্রে এই নীতিগুলির অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাব পড়তে পারে। যেমন এই ঘটনাগুলির ক্ষেত্রে ঘটেছে। মেটার নীতিগুলি লঙ্ঘন না করা সত্ত্বেও, একাধিকবার মেটার স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম সেগুলিকে নিষিদ্ধ বিষয়বস্তু চিহ্নিত করেছে।”