২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৪:৫৪:০৫ পূর্বাহ্ন


পাকিস্তানে মসজিদে হামলায় নিহত ৪৪, ভাইয়ের হত্যার বদলা নিতেই হামলা!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০১-২০২৩
পাকিস্তানে মসজিদে হামলায় নিহত ৪৪, ভাইয়ের হত্যার বদলা নিতেই হামলা! ফাইল ফটো


পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে মসজিদে ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। এ ঘটনায় অন্তত ৪৪ জন নিহত ও দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন। খবর জিও নিউজের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (৩০ জানুয়ারি) পেশোয়ারের পুলিশ লাইনস এলাকায় একটি মসজিদের ভেতরে নামাজের সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। হামলায় মসজিদের একটি অংশ ধসে গেছে।

আহতদের পেশোয়ারের লেডি রিডিং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল অবস্থান করছে।

জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মসজিদে জোহরের নামাজের সময় সামনের সারিতে উপস্থিত ছিলেন আত্মঘাতী হামলাকারী। সেখানে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

পাকিস্তানি তালেবানের কমান্ডার সারবাকাফ মোহমান্দ টুইটারে দেয়া এক বার্তায় পেশোয়ার মসজিদে হামলার দায় স্বীকার করেছেন।

দেশটির সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে নিহত টিটিপি কমান্ডার উমর খালিদ খুরাসানির ভাই মোহমান্দ। গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর এক অভিযানে নিহত হন উমর খালিদ। ভাইকে হত্যার প্রতিশোধ নিতেই পেশোয়ারের মসজিদে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন তালেবানের কমান্ডার সারবাকাফ মোহমান্দ।

তবে এ হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জঙ্গিগোষ্ঠীটির প্রধান মুখপাত্রের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইসলামাবাদে সতর্কতা জারি: খাইবার পাখতুনখোয়ার রাজধানী পেশোয়ারে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর দেশটির কেন্দ্রীয় রাজধানী ইসলামাবাদে সতর্কতা জারির পাশাপাশি কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

পুলিশের এক টুইটবার্তায় জানানো হয়, ইসলামাবাদ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক আকবর নাসের খানের নির্দেশে ইসলামাবাদে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি সড়কে নজরদারির পাশাপাশি তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। এমনকি, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও ভবনগুলোতে স্নাইপার শ্যুটার মোতায়েন করা হয়েছে। সেফ সিটি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

পেশোয়ারে পৌঁছেছেন শাহবাজ শরিফ: এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পেশোয়ারে পৌঁছেছেন। এরইমধ্যে বিস্ফোরণের ঘটনা সম্পর্কে তাকে বিস্তারিত অবহিত করা হয়েছে।

হামলার ঘটনায় আহতদের দেখতে হাসপাতালে যাবেন শাহবাজ শরিফ। তার সঙ্গে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ উপস্থিত থাকবেন।

এর আগে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মসজিদের ভেতরে বিস্ফোরণ প্রমাণ করে, হামলায় জড়িতদের ‘ইসলামের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।’

মসজিদে হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার করে তিনি বলেছেন, ‘এই সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানকে রক্ষা করার দায়িত্ব পালনকারীদের লক্ষ্য করে ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।’

চলছে উদ্ধার অভিযান: বিস্ফোরণের ঘটনায় মসজিদের একটি অংশ ধসে গেছে। সেখানে বেশ কয়েকজন আটকা পড়েছেন।

উদ্ধার অভিযানের মুখপাত্র বিলাল ফাইজি জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে পাঁচ থেকে ছয়জন আটকা পড়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘অভিযান ধীরগতিতে পরিচালিত হচ্ছে। কোনো ঝুঁকি নেয়া হচ্ছে না। সময় লাগলেও মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে।’

ইমরান খানের নিন্দা: এদিকে দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা ইমরান খান এক টুইটবার্তায় এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসবাদী আত্মঘাতী হামলা’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছেন। হতাহতদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন তিনি।

টুইটবার্তায় ইমরান খান বলেন, সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলায় আমাদের পুলিশ ও গোয়েন্দাবাহিনীকে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন।