২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৪:৫০:২৫ অপরাহ্ন


বিদ্যুৎ খাতে গ্রাহকের ওপর চাপানো হচ্ছে অযৌক্তিক ব্যয়ের বোঝা!
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০২-২০২৪
বিদ্যুৎ খাতে গ্রাহকের ওপর চাপানো হচ্ছে অযৌক্তিক ব্যয়ের বোঝা! বিদ্যুৎ খাতে গ্রাহকের ওপর চাপানো হচ্ছে অযৌক্তিক ব্যয়ের বোঝা!


গ্রাহক পর্যায়ে আরেক দফা বাড়ছে বিদ্যুতের দাম। নির্বাহী আদেশে আগামী মাস থেকেই নতুন এ দাম কার্যকরের পরিকল্পনা বিদ্যুৎ বিভাগের। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই আসতে পারে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন। নীতিনির্ধারকরা বলছেন, ডলারের দাম আর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবির) ঘাটতি মেটাতেই আরেক দফা এ মূল্য সমন্বয়। যদিও দাম বাড়ানোকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ খাতে অযৌক্তিক ব্যয়ের বোঝা চাপানো হচ্ছে গ্রাহকের ওপর।

আয়ের বিপরীতে পাল্লা দিয়ে বাড়া ব্যয়ের রাশ টানতে এমনিতেই হিমশিম অবস্থা রংমিস্ত্রি শহীদ মিয়ার। তার ওপর গত বছর কয়েক দফা বেড়েছে বিদ্যুৎসহ জ্বালানি পণ্যের দাম। আরেক দফা যখন বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর তোড়জোড়, শহীদ মিয়ার মনে তখন, উঁকি দিচ্ছে নানা প্রশ্ন।

তিনি বলেন, সব জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, সে অনুযায়ী বাড়েনি আয়। সামান্য মজুরি দিয়ে সংসার চালনোই কষ্টকর। এ অবস্থায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ালে, সেটি নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর জুলুম করা হবে।

কেবল নিম্ন আয়ের মানুষের নয়, নিত্যদিনের হিসাব মিলাতে মধ্যবিত্তদের জন্যও উদ্বেগ জাগাচ্ছে কৌশলগত পণ্যটি। তবে বাড়তি দাম চুকানোর পরও গত গ্রীষ্মে ঠিকঠাক মেলেনি বিদ্যুৎ। 

গত বছরের জানুয়ারি থেকে নজিরবিহীনভাবে টানা তিন মাস দফায় দফায় দাম বাড়ে বিদ্যুতের। সব মিলিয়ে ১৪ বছরে গ্রাহক পর্যায়ে দাম সমন্বয় হয়েছে ১২ বার। তারপরও গত অর্থবছর প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতির দাবি পিডিবির, সে অজুহাতে আগামী মাস থেকে ভোক্তার কাঁধে আরেক দফা বাড়তি দামের বোঝা চাপাতে চায় বিদ্যুৎ বিভাগ।

সপ্তাহখানের মধ্যেই জারি হতে পারে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন। আভাস মিলছে গড়ে ৫ শতাংশ হারে দাম বাড়ানোর। কিন্তু সাধারণ মানুষের নানা প্রশ্নের পরও কেনো আবারো দাম বাড়ানোর পথে হাঁটছে বিদ্যুৎ বিভাগ, এমন প্রশ্নের জবাবে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ডলারের সঙ্গে টাকার মূল্যের অবমূল্যায়নের ঘাটতি পূরণ করতে দাম সমন্বয় করতে হবে। কারণ বিদ্যুত উৎপাদনে ৯ টাকা খরচের বিপরীতে ৬ টাকা বিক্রি করতে হলে, ঘাটতির ৩ টাকা আসবে কোথা থেকে?

 তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অযৌক্তিক ব্যয়ের বোঝা চাপানো হচ্ছে গ্রাহকের কাঁধে। দাম না বাড়িয়েও বিকল্প ছিলো অনেক।

 কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, অন্যায় ও অযৌক্তিক ব্যয় সংযোজন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এটি গ্রাহকের সঙ্গে প্রতরণা ও প্রহসনমূলক কর্মকান্ড।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন, অব্যবস্থাপনার কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এটি অযৌক্তিক। দেশে অতিরিক্ত পাওয়ার প্লান্ট বসিয়ে ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া হচ্ছে, যা অপ্রয়োজনীয়। এই অব্যবস্থাপনার দায় কেন জনগণ নেবে?

 গণশুনানিকে পাশ কাটিয়ে এবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে নির্বাহী আদেশে, ফলে থাকছে না গ্রাহকদের পক্ষ থেকে যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ। সূত্র: সময় টিভি।