২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৪:৫৫:২৭ পূর্বাহ্ন


প্রেমের টানে মার্কিন তরুণী ছুটে এলেন গাজীপুরে
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৭-২০২২
প্রেমের টানে মার্কিন তরুণী ছুটে এলেন গাজীপুরে প্রেমের টানে মার্কিন তরুণী ছুটে এলেন গাজীপুরে


আমেরিকা থেকে এক তরুণী প্রেমের টানে গাজীপুরে ইমরান খান নামে এক যুবকের বাড়িতে চলে এসেছেন। লিডিয়া লুজা নামে ওই তরুণী সোমবার (১১ জুলাই) ভোরে হযরত শাহজালাল (রহ:) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

সেখান থেকে ইমরান খান তাকে স্বাগত জানিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে যান। ঈদের পরদিন ভিনদেশি এক নারী পারিবারিক সদস্য হয়ে আসায় ওই পরিবারের লোকজনের ঈদ কাটছে একটু ভিন্ন স্বাদে। লিডিয়া লুজা আমেরিকার অ্যারিজোনা স্টেটের বাসিন্দা। বাবা নেই, মা অন্য পরিবারের সদস্য। দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন তিনি। ছোট বেলা থেকেই লিডিয়া লুজা দাদুর কাছে বড় হয়েছেন। ধর্মান্তরিত হয়ে এখন তার নামের সঙ্গে স্বামীর পরিবারের উপাধি হিসেবে ‘খান’ শব্দটি যুক্ত হয়েছে। নিজ দেশে একটি চাকরিতে যুক্ত ছিলেন তিনি। এখন বেকার সময় কাটাচ্ছেন।

ইমরান খান গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরমী কুমারভিটা এলাকার মৃত জালাল উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। ইস্টওয়েস্ট প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করার আগেই তিনি চাকরি খুঁজছেন। সোমবার এ দম্পতিকে দেখতে পাড়া-প্রতিবেশীসহ আশপাশের এলাকার লোকজন অভিনন্দন জানাতে আসছেন। ওই এলাকার ঈদের আনন্দ এখন লুজা-ইমরান দম্পতিকে ঘিরে।

লিডিয়া লুজা বলেন, ফেসবুকের কল্যাণে তাদের মধ্যে পরিচয় গড়ে উঠে। ফেসবুকে আলাপচারিতায় ইমরানকে তার ভালো লাগে। উভয় পরিবারের সম্মতিতেই তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে বৈবাহিক বন্ধনের সিদ্ধান্ত নেন।

লিডিয়া লুজা বলেন, ইমরান সৎ মানুষ। সেদিক দিয়ে বাংলাদেশের মানুষও সৎ এবং প্রকৃতির মতোই এ দেশের মানুষগুলো সহজ সরল। সব মানুষ ইংরেজি না জানার কারণে সবার সঙ্গে ভাব বিনিময় করতে তার একটু সমস্যা হয়। তাছাড়া ভাষাগত পার্থক্য ও সততা ছাড়া আমেরিকা ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে অন্য সব ক্ষেত্রে মিল রয়েছে। তিনি বরমী বাজার ও আশপাশের প্রকৃতি ঘুরে দেখেছেন। বাংলাদেশ তার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।

লুজা জানান, তার শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম অসুস্থ। তাই মাঝে মধ্যে আমেরিকা যাবেন এবং বেশিরভাগ সময় স্বামী ইমরানের বাড়িতেই থাকবেন। শাশুড়ি সুস্থ হলে ইমরানকে নিয়ে আমেরিকায় বসবাস করবেন।

ইমরান খান জানান, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহের ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। মাসখানেক পর লিডিয়া লুজা তাকে প্রস্তাব দেয়। প্রথমে সে তার প্রস্তাব বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। পরে মার্চ মাসের প্রথম দিকে আমেরিকা থেকে তুর্কি হয়ে লুজা বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল (রহ:) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত চলে আসে। আমেরিকার নাগরিক হওয়ায় তার ধারণা ছিল ভিসা ছাড়াই তিনি বাংলাদেশে আসতে পারবেন। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে আবার তাকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।

ইমরান জানান, পরে উভয় পরিবারের সিদ্ধান্তে তারা নেপালে সাক্ষাৎ করেন এবং নেপালের একটি মসজিদে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। লুজার সঙ্গে কেউ না থাকলেও ইমরানের সঙ্গে ওই সময় তার পরিবারের সদস্য ছিলেন। সেখানে কয়েকদিন অবকাশ কাটিয়ে যার যার দেশে ফিরে যান। পরে ইমরানের সহযোগিতায় ভিসা সম্পাদনের মাধ্যমে ১১ জুলাই লিডিয়া লুজা খান বাংলাদেশে আসেন।

প্রতিবেশী বাবুল মিয়া জানান, তার মতো অনেকেই এই দম্পতিকে দেখতে ইমরানের বাড়িতে আসছেন। আমেরিকার মেয়ে বলে কথা, তাও আবার বাংলাদেশি যুবকের প্রেমের টানে একেবারে বাংলাদেশের তৃণমূলের একটি গ্রামে। বিষয়টি এলাকার মানুষের মনে ভিন্ন আনন্দের যোগান দিয়েছে।

ইমরানের মা আনোয়ারা বেগম জানান, আমেরিকার মেয়েকে বিয়ে করায় তিনি খুশি হয়েছেন। যেহেতু ধর্মান্তরিত হয়ে তারা এ বিয়েতে আবদ্ধ হয়েছে সেজন্য তিনি খুশি হয়েছেন এবং তাদের পারিবারিকভাবে মেনে নিয়েছেন।